Studypress News

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর ২০১৯

17 Oct 2019

প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা গত ৩ অক্টোবর, ২০১৯  চার দিনের সরকারি সফরে নয়াদিল্লি যান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে এই সফরে যান তিনি। ৩ ও ৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম আয়োজিত ‘ইন্ডিয়া ইকোনমিক সামিট’-এ যোগ দেন। সফরের শেষ দুই দিন ৫ ও ৬ অক্টোবর শেখ হাসিনা দ্বিপাক্ষিক সফর করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ঐতিহাসিক হায়দরাবাদ হাউজে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে আলোচনা করেন। 

এরপর দুই দেশের সরকার প্রধানের নেতৃত্বে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পর তাদের উপস্থিতিতেই নিম্নোক্ত চুক্তি সই ও চুক্তিপত্র বিনিময় হয়-

*ফেনী নদীর ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করতে পারবে ভারত; ওই পানি তারা ত্রিপুরা সাবরুম শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্পে ব্যবহার করবে।

* উপকূলে সার্বক্ষণিক মনিটরিং ব্যবস্থার (কোয়েস্টাল সারভাইল্যান্স সিস্টেম-সিএসএস) বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে দুই দেশ।

* চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্র বন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য পরিবহনের বিষয়ে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) সই হয়েছে।

* বাংলাদেশকে দেওয়া ভারতের ঋণের প্রকল্প বাস্তবায়নে চুক্তি হয়েছে ।

* ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইউনিভার্সিটি অব হায়দরাবাদের সহযোগিতা বিনিময় সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

* এছাড়া সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিনিময়, নবায়ন এবং যুব উন্নয়নে সহযোগিতা নিয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

 

চুক্তি ও সমঝোতাপত্র বিনিময়ের পর শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী যৌথভাবে প্রকল্প তিনটি উদ্বোধন করেন।  

প্রকল্পগুলো হলো-

*খুলনায় ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট।

*ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে বিবেকানন্দ ভবন।

*বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় এলপিজি আমদানি।

প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা বলেন, “বিগত এক দশকে আমাদের উভয় দেশের মধ্যে বিভিন্ন প্রথাগত সহযোগিতা প্রভূত পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন নতুন ও অপ্রচলিত খাত যেমন ব্লু ইকোনমি ও মেরিটাইম, পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, মহাকাশ গবেষণা, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ রপ্তানি ও সাইবার সিকিউরিটি ইত্যাদি খাতে উভয় দেশ সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করেছে”।

এছাড়া, বাংলাদেশের প্রাপ্তি বিষয়ক সাংবাদিকদের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী জানান যে,রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারত সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছে। আসামের নাগরিক তালিকা নিয়ে সাংবাদিকদের আরেকটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাঁকে নিজে আশ্বাস দিয়েছেন, অতএব তিনি এটা নিয়ে অন্য কিছু ভাববেন না।  এর আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও আশ্বস্ত করেছেন যে, এটা তাঁদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, বাংলাদেশের উদ্বেগের কিছু নেই।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী ৬ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। এছাড়া,ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শংকর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন। শেখ হাসিনা হায়দরাবাদ হাউজে আনুষ্ঠানিক ভোজসভায় যোগ দেবেন এবং পরিদর্শক বইয়ে স্বাক্ষর করবেন। এই সফরকালে ভারতের বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগাল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করবেন। শ্যাম বেনেগাল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর চলচ্চিত্র নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছেন। 

প্রধানমন্ত্রী নয়াদিল্লি সফর শেষে ৬ অক্টোবর রাতে ঢাকায় ফিরে আসেন।