Studypress News

২০২৪ সালের চিকিৎসা ক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কার: মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কারে ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রুভকুন

16 Oct 2024

২০২৪ সালের চিকিৎসা ক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কার দুই বিজ্ঞানী, ভিক্টর অ্যামব্রোস এবং গ্যারি রুভকুন কে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের এই পুরস্কারটি পেয়েছেন মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কারের জন্য, যা একটি নতুন শ্রেণির রক্তাণু, যা জিনের নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মাইক্রোআরএনএ (miRNA) মূলত ক্ষুদ্র RNA এর একটি নতুন শ্রেণী, যা গঠনগতভাবে ছোট এবং কোষের বিভিন্ন জীববিজ্ঞানীয় প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ। এই আবিষ্কারটি ১৯৯৩ সালে শুরু হয়েছিল, যখন অ্যামব্রোস এবং রুভকুন ছোট কৃমি C. elegans নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তাঁরা দেখেন কিভাবে এই ক্ষুদ্র RNA মলিকিউলগুলি জিনের প্রকাশকে নিয়ন্ত্রণ করে, এবং এটি জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এটি জানা যায় যে, মাইক্রোআরএনএ গুলি কিভাবে বিকাশ ও কাজ করে, তা সাধারণত সব মাল্টিসেলুলার জীব, যেমন মানুষের জন্যও প্রযোজ্য। তাদের গবেষণার ফলাফল এক নতুন স্তরের জিন নিয়ন্ত্রণের উপর আলোকপাত করে, যা সময়ের সাথে সাথে বিবর্তনের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই গবেষণার ফলে বর্তমানে বিভিন্ন রোগের চিকিত্সা ও পরিচালনায় মাইক্রোআরএনএ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

এই আবিষ্কারটি কেবল তাত্ত্বিক গবেষণার জন্য নয়, বরং চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাস্তবসম্মত প্রভাব ফেলছে। বিভিন্ন জিনগত রোগ, ক্যান্সার এবং হৃদরোগের চিকিত্সায় মাইক্রোআরএনএয়ের ভূমিকা এখন বৈজ্ঞানিক সমাজের কাছে স্পষ্ট। উদাহরণস্বরূপ, কিছু মাইক্রোআরএনএ এমনকি টিউমারের বৃদ্ধি প্রতিরোধে সক্ষম বলে প্রমাণিত হয়েছে।

ভিক্টর অ্যামব্রোস ১৯৫৩ সালের ১ ডিসেম্বর, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ার রাজ্যের হানোভারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বর্তমানে UMass Chan Medical School, উরস্টার, ম্যাসাচুসেটসে কর্মরত আছেন।

অন্যদিকে, গ্যারি রুভকুন ১৯৫২ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতাল এবং হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল, বস্টনে কাজ করেন। দুই বিজ্ঞানী মাইক্রোআরএনএর আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরস্কারের অর্ধেক ভাগীদার।

এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে “মাইক্রোআরএনএ এবং এর পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল জিন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকার আবিষ্কারের জন্য”। এটি জিন নিয়ন্ত্রণের একটি নতুন স্তর উন্মোচন করেছে, যা ভবিষ্যতে বিভিন্ন গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

এবারের নোবেল পুরস্কার মানব জাতির জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। মাইক্রোআরএনএ এর মতো ক্ষুদ্র, কিন্তু অতি গুরুত্বপূর্ণ মলিকিউলগুলি যে কত বড় পরিবর্তন আনতে পারে, তা আমাদের গবেষণা এবং চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। বিজ্ঞানীরা এখন এ নিয়ে আরও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে, আশা করা হচ্ছে যে ভবিষ্যতে এটি মানব স্বাস্থ্য ও চিকিৎসায় নতুন দিশা দিতে সক্ষম হবে।


পূর্ববর্তী নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তরা:  চিকিৎসা ক্ষেত্রে সেরা গবেষকরা

চিকিৎসা ক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখযোগ্য গবেষকদের তালিকা নিচে দেওয়া হলো:

১৯১৩: অ্যালফ্রেড ফ্লোয়েড - ম্যালেরিয়ার জন্য প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য

১৯৫০: ফ্রেডেরিক সানগার - প্রোটিনের গঠন নিয়ে কাজ

১৯৬২: ফ্রান্সিস ক্রিক, জেমস ওয়াটসন এবং মরিস উইলকিনস - ডিএনএ-এর গঠন আবিষ্কারের জন্য

২০০১: পিটার ডি. কোহেন - মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতির জন্য

এই গবেষকদের অবদানের মাধ্যমে চিকিৎসা গবেষণায় নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে, যা মানবতার কল্যাণে অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে।