Studypress Blog

ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কিভাবে হচ্ছে

22 Aug 2018

সম্প্রতি বাংলাদেশে আঘাত হানার কথা ছিল ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদ’ এর। হুদহুদ ওমান দেশের একটি পাখির নাম। এই পাখির কথা পবিত্র কুরআন শরীফে রয়েছে। আমাদের দেশে হুদহুদ পাখিটি মোহনচূড়া নামে পরিচিত।পাখিটির নামকরণ ‘মোহনচূড়া’ দিয়েছেন কথাসাহিত্যিক বনফুল।

তৃতীয় শতকে শ্রীলংকার শাসক ছিলেন রাজা ‘মহাসেন’ তার নামানুসারেই জাতিসংঘের এশিয়া- প্যাসিফিক অঞ্চলের আবহাওয়াবিদদের সংস্থা এস্কেপে এ ঝড়টির নামকরণ করে। তথ্য সংরক্ষণও বোঝানোর সুবিধার জন্য আগে থেকেই এ ঝড়ের নাম ঠিক করে রাখা হয়। যেমন, বঙ্গোপসাগরে পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়েছে ‘ফাইলিন’ ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ নিয়ে কৌতূহল সবারই। বর্তমানে সহজ নামকরণ করা হয় ঘূর্ণিঝড়ের। মজার ব্যাপার হচ্ছে, নামগুলোর বেশির ভাগই নারীদের নামে। যেমন রিটা, ক্যাটরিনা, নার্গিস, সিডর, রেশমী,বিজলী। আমেরিকায় যে প্রলয়ঙ্করী ঝড় আঘাত হেনেছে, সেই স্যান্ডির নামও নারীর। আগে শুধু নারীদের নামে ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করা হলেও ১৯৭৯ সাল থেকে পুরুষের নাম অন্তর্ভুক্ত হয় এবংবর্তমান তালিকায় সমানভাবে পর্যায়ক্রমে মহিলা ও পুরুষের নাম রয়েছে। ঝড়হেতু মৃত্যু ও ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত, তাই কোনো নাম দ্বিতীয়বার ব্যবহার করা হয় না। অতীতে ঝড়ের নামকরণ করা হতো অক্ষাংশ- দ্রাঘিমাংশের ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু এটি প্রকাশের ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দেয়। যেমন ৩ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ ও ৭২ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশের ঝড়টি এখন বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে- এটি বলার চেয়ে ‘ঘূর্ণিঝড় মহাসেন ধেয়েআসছে’ বলা অনেক সহজ।বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার আঞ্চলিক কমিটিই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে থাকে। উত্তর ভারতীয় মহাসগরীয় ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে থাকে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ। বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা এবং ওমানের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার একটি প্যানেল হচ্ছে এস্কেপে। ২০০০ সালে স্কেপের প্রস্তাবানুযায়ী প্রতিটি দেশ থেকে ১০টি নাম জমা নেওয়া হয় ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করার জন্য। এখান থেকেই পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করা হয়। আগামী ২০১৬ সাল পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা আছে। মহাসেনের পর আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় ফাইলিন। তারপর পর্যায়ক্রমে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়গুলোর নাম হলো হেলেন, লহর, মাদী, নানাউক, হুদহুদ, নিলুফার, প্রিয়া, কোমেন, চপলা, মেঘ, ভালি,কায়নত্দ, নাদা, ভরদাহ, সামা, মোরা, অক্ষি, সাগর, বাজু, দায়ে, লুবান, তিতলি, দাস,ফেথাই, ফণী, বায়ু, হিকা, কায়ের, মহা, বুলবুল, সোবা ও আমপান। দেশের ইতিহাসে সর্বশেষ প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’ উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হেনেছিল ২০০৯ সালের ২৫ মে। ভারত মহাসাগর থেকে সৃষ্ট এ ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণকরেন মালদ্বীপের আবহাওয়াবিদরা। ‘আইলা’ শব্দের অর্থ ডলফিন। ২০০৮ সালের ৩ মে উত্তর ভারত মহাসাগর থেকে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নাম ছিল ‘নার্গিস’ এটি আঘাত হেনেছিল প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার উপকূলে।২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে ‘সিডর’। আবহাওয়াবিদরা জানান, ভয়াবহতার দিক থেকে বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ের বৈশিষ্ট্য প্রায় একই। তবে স্থানীয়ভাবে ঘূর্ণিঝড়গুলোর নাম ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন সাইক্লোন বলা হয় ভারত মহাসগরীয় অঞ্চল থেকে উৎপন্ন ঘূর্ণিঝড়গুলোকে। প্রশান্ত মহাসগরীয় অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় টাইফুন। আটলান্টিক মহাসাগরীয় এলাকার ঘূর্ণিঝড়গুলোকে বলা হয় হারিকেন।

Govt Jobs

Bank Jobs

Viva Jobs