Studypress News

এল নিনোর কারণে বিশ্বে খাদ্য সংকট বাড়ছে : জাতিসংঘ

17 Feb 2016

তীব্র খরা ও বন্যার কারণে খাদ্য ও পানি সংকটে পড়েছে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল, এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার প্রায় ১০ কোটি মানুষ। আর এর জন্য দায়ী আবহাওয়ার ঘটনা ‘এল নিনো’, জানিয়েছে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের সরকার। শুধু তাই নয় এল নিনোর কারণে জিকা ভাইরাসসহ বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

২০১৫ সালের এল নিনো শুরুর পর থেকে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এরই মধ্যে তাপপ্রবাহ, পানি ঘাটতি ও দাবানলের শিকার হয়েছে। জিম্বাবুয়ে, মোজাম্বিক, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাম্বিয়া, মালাওয়ি ও সোয়াজিল্যান্ডের গ্রামে বসবাসরত প্রায় চার কোটি ও শহরাঞ্চলের প্রায় ৯০ লাখ মানুষকে আগামী বছর খাদ্য সহায়তা দিতে হবে হবে বলে মনে করছে জাতিসংঘ। আর জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সমন্বয় কার্যালয়ের মতে, ইথিওপিয়ায় এক কোটি মানুষ ও গুয়াতেমালা, হন্ডুরাসের ২৮ লাখ মানুষের খাদ্য সহায়তা লাগবে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বলছে, এল নিনোর কারণে পেরু, ইকুয়েডর, প্যারাগুয়ে ও ব্রাজিলের দক্ষিণে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে জিকা ভাইরাসের বিস্তারও বাড়তে পারে।

এল নিনো কি?

সাগরের উপরিভাগের পানির তাপমাত্রার এক নিরবচ্ছিন্ন পরিবর্তনই হচ্ছে এল নিনো। এই উষ্ণ পানিই অর্ধেক পৃথিবীতে গভীর প্রভাব ফেলে—ক্যালিফোর্নিয়ায় ভারি বৃষ্টিপাত, অস্ট্রেলিয়ায় দাবানল ও প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি। ভারত মহাসাগর, অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার উপরিভাগের পানির চাপের পরিবর্তনের সঙ্গে তাহিতিসহ মধ্য-পূর্ব সমুদ্রের বায়ুচাপ কমলে বোঝা যায়, এল নিনো চলছে। একই সঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগরে গরম বাতাস ও পেরুভিয়ান মরুভূমিতে বৃষ্টি শুরু হলেও এল নিনোকে দায়ী করা হয়। ১৬০০ সালে পেরুর জেলেদের চোখে এল নিনো প্রথম ধরা পড়ে। এল নিনোর উষ্ণ বিষুবীয় জলস্রোত ঠাণ্ডা বিষুবীয় হাবল্ট স্রোতের সঙ্গে মিশে পরিবর্তন ঘটায়। ফলে অত্যধিক গরম সামুদ্রিক জলরাশির দেখা মেলে। সেই সঙ্গে মাছেরা অদৃশ্য হয়ে যায়। সে সময়েই পেরুর জেলেরা এটা টের পেয়েছিলেন। এল নিনোর কারণে দক্ষিণ আমেরিকা ও পূর্ব আফ্রিকায় ভারি বৃষ্টিপাত, উচ্চতাপমাত্রা ও ঘূর্ণিঝড় শুরু হয়। মধ্য আমেরিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় বৃষ্টিপাতের মাত্রা কমে যায়, আবহাওয়া শুষ্ক হতে হতে অতি খরায় রূপ নেয়।

(ছবি: উইকিপিডিয়া)