Studypress News

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন গোটাবাইয়া রাজাপাকসে

18 Nov 2019

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জয়ী হয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসের ভাই গোতাভায়া রাজাপাকসে।তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন দেশটির শাসক দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) প্রার্থী সাজিথ প্রেমাদাসাকে। তিনি এ হার মেনে নিয়ে রাজাপাকসেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।রাজাপাকসে এর আগে শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে ছিলেন শ্রীলঙ্কার দু’বারের প্রেসিডেন্ট। এবারের নির্বাচনে তার দলের প্রধান প্রচারণা ছিল শ্রীলঙ্কার নিরাপত্তা ইস্যুকেন্দ্রিক। এ বছরের এপ্রিল মাসে দেশটিতে এক ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছিলেন কমপক্ষে ২৬৯ জন। এরপরই এ বিষয়টি রাজনীতির মাঠে পালাবদলে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

 

৭০ বছরের গোতাভায়া রাজাপক্ষে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। তামিল গেরিলাদের পরাস্ত করেন তিনি। ৩৭ বছর ধরে চলা বিচ্ছিন্নতাবাদী যুদ্ধের অবসান ঘটান। নির্বাচনে জয়ী রাজাপাকসে পেয়েছেন ৫২.২৫ শতাংশ ভোট। মোট ভোট দিয়েছেন ভোটারদের ৮৩.৭ শতাংশ।সিংহলি অধ্যুষিত এলাকায় তাঁর প্রধান সমর্থক গোষ্ঠীর কল্যাণে ভোটের হার ৫০ শতাংশ । অপরদিকে গোতাভায়ার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাজিথ প্রেমাদাসা পেয়েছেন ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট। সংখ্যালঘু তামিল এলাকায় তিনি বেশি সমর্থন পেয়েছেন। নির্বাচনের ফল মেনে নিয়েছেন প্রেমাদাসা। তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী গোতাভায়াকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, জনগণের রায়কে সম্মান জানাচ্ছি। শ্রীলঙ্কার সপ্তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়লাভ করেন  গোতাভায়া রাজাপক্ষেকে।

জনমত জরিপ নিষিদ্ধ হলেও সব প্রার্থীর মধ্যে আগে থেকেই এগিয়ে ছিলেন সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গোতাভায়া রাজাপক্ষে। প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ মাহিন্দা রাজাপক্ষে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তাঁর ছোট ভাই গোতাভায়া রাজাপক্ষে তাঁদের দল ফ্রিডম পার্টির শীর্ষ পদে রয়েছেন। তামিল গেরিলাদের প্রতিহত করে সমর্থকদের ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।এ বছরের এপ্রিল মাসে ইস্টার সানডেতে উগ্রবাদীদের হামলায় ২৬৯ জন নিহত হওয়ার পর গোতাভায়া দেশের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

শ্রীলঙ্কায় চলতি বছরের অনেকটা সময়জুড়ে ছিল রাজনৈতিক অস্থিরতা। প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের মধ্যে দ্বন্দ্বই ছিল এই সংকটের মূল কারণ।  দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাইত্রিপালা সিরিসেনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে দূরে ছিলেন। এই নির্বাচনে এটিই ছিল প্রধান নিয়ামক।  এর মধ্যেই ঘটে যায় দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধরনের জঙ্গি হামলা। গত এপ্রিলে স্টার সানডের দিনে একযোগে কয়েকটি গির্জা ও হোটেলে চালানো হামলায় নিহত হন ২৫০ এর বেশি মানুষ। স্টার সানডেতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা তাকে এতটাই বিতর্কিত করে তুলেছিলো যে, রাজনীতি থেকে রীতিমতো গুটিয়ে নিয়েছেন নিজেকে। ওই হামলার পর বড় ধরনের প্রভাব পড়ে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে।দেশটির সরকার মেনে নিতে বাধ্য হয় যে, ওই হামলা ছিল তাদের বড় ধরনের গোয়েন্দা ব্যর্থতা।

এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাজাপাকসে ও প্রেমাদাসা ছাড়াও মোট ৩৫ জন প্রার্থী ছিলেন।২০০৯ সালে দেশটির গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এটি ৩য় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।