Studypress News
বৃহস্পতির কক্ষে পা রাখল জুনো
04 Jul 2016
বৃহস্পতির কক্ষপথ পরিভ্রমণ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার(NASA) পাঠানো মনুষ্যবিহীন নভোযান জুনো(JUNO)। ২৭০ কোটি কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বৃহস্পতির কক্ষপথে ঢুকে পড়ে এ নভোযান। পাঁচ বছর আগে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট এটি যাত্রা শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে ১১০ কোটি মার্কিন ডলার খরচে তৈরি জুনো নামের নভোযানটি বৃহস্পতি গ্রহ পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে পাঠায় নাসা। গবেষকেরা বলছেন, এর মাধ্যমে বৃহস্পতি গ্রহের অজানা অনেক তথ্য জানা সম্ভব হবে।
গবেষকেরা বলছেন, জুনোর এই মিশনে বৃহস্পতিকে ৩৭ বার প্রদক্ষিণ করার সুযোগ থাকবে। এরপর ২০১৮ সালে এটি বৃহস্পতির বুকে আছড়ে পড়বে।
অবশ্য বৃহস্পতিকে প্রদক্ষিণ করার হিসেবে জুনো প্রথম কোনো নভোযান নয়। এর আগে ১৯৮৯ সালে পাঠানো গ্যালিলিও নভোযানটিও বৃহস্পতি সম্পর্কে অনেক তথ্য জানিয়েছে। তবে জুনো আরও কাছ থেকে বৃহস্পতিকে জানার সুযোগ করে দেবে।
গ্যালিলিও বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপা, গ্যানিমিড ও ক্যালিস্টোর পৃষ্ঠে লোনা পানি থাকার প্রমাণ পেয়েছিল। নাসার গবেষকেরা বলছেন, জুনো গ্যালিলিওর চেয়ে বৃহস্পতির কাছাকাছি যেতে পারবে। এটি বৃহস্পতির ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার ১০০ মাইল ওপরে থেকে তথ্য পাঠাতে পারবে।
এক নজরে জুনোর অভিযান:
১. জুনো যাত্রা শুরু করে ৫ আগস্ট ২০১১, পৌঁছায় ৪ জুলাই ২০১৬।
২. এর ওজন ৩ দশমিক ৬ টন (ছোটখাটো হাতির সমান)।
৩. সাড়ে তিন মিটার আকারের এই নভোযানে ৯ মিটার দৈর্ঘ্যের সৌরপ্যানেল রয়েছে।
৪. এতে এক সেন্টিমিটার পুরু টাইটেনিয়ামের স্তর রয়েছে যাতে বৃহস্পতির তেজস্ক্রিয় বলয় পার হয়ে গ্রহটিকে ঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়।
এক নজরে বৃহস্পতি
বৃহস্পতি গ্রহ (ইংরেজি জুপিটার) সূর্য থেকে দূরত্বের দিক দিয়ে পঞ্চম এবং আকার আয়তনের দিক দিয়ে সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ। বৃহস্পতিসহ আরও তিনটি গ্রহ, অর্থাৎ শনি, ইউরেনাস ও নেপচুনকে একসঙ্গে গ্যাসদানব বলা হয়। এটি পৃথিবীর আকাশে দৃশ্যমান তৃতীয় উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। বৃহস্পতি গ্রহের প্রাথমিক উপাদান হচ্ছে হাইড্রোজেন ও সামান্য পরিমাণ হিলিয়াম। এতে অপেক্ষাকৃত ভারী মৌলসমূহ দ্বারা গঠিত একটি কেন্দ্রও থাকতে পারে। খুব দ্রুত ঘূর্ণনের কারণে এর আকৃতি হয়েছে কমলাকৃতির গোলকের মতো, বিষুবের নিকটে ক্ষুদ্র, কিন্তু চোখে পড়ার মতো উল্লেখযোগ্য একটি স্ফীতি অংশ রয়েছে। এর ৬৩টি উপগ্রহ রয়েছে। এর মধ্যে চারটি উপগ্রহ বৃহৎ আকৃতির। এই চারটিকে গ্যালিলীয় উপগ্রহ বলা হয়। কারণ, ১৬১০ সালে গ্যালিলিও প্রথম এই চার উপগ্রহ আবিষ্কার করেছিলেন। সর্ববৃহৎ উপগ্রহ গ্যানিমেডের আকৃতি বুধ গ্রহের চেয়েও বেশি। বৃহস্পতির সবচেয়ে বড় চারটি উপগ্রহ হলো আয়ো, ইউরোপা, গ্যানিমিড ও ক্যালিস্টো।