Studypress News

জামালগঞ্জ কয়লাখনিতে আহরণযোগ্য গ্যাস আর নেই

19 Apr 2016

জামালগঞ্জ কয়লাখনি এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত দেশের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে বেশি গভীর, আর এই খনিতেই আহরণযোগ্য গ্যাস নেই। খনিটিতে দুটি অনুসন্ধান কূপ খননের ফল বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের অংশ হিসেবে সেখানে আরেকটি কূপ খননের কাজ চলছে।

প্রতিটি কয়লাখনিতে প্রাকৃতিকভাবেই কমবেশি মিথেন গ্যাস থাকে। খনিতে কূপ খনন করে সেই গ্যাস তুলে শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন কিংবা অন্য কোনো ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কয়লাখনি থেকে গ্যাস তোলার এই পদ্ধতির নাম ‘কোল বেড মিথেন’, যা সিবিএম নামে পরিচিত।

কয়লাসমৃদ্ধ অনেক দেশ সিবিএম পদ্ধতিতে গ্যাস আহরণ করে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করছে। সবচেয়ে বেশি করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ভারতসহ অনেক দেশেই সিবিএম পদ্ধতি চালু আছে। ভারতের ৩৩টি কয়লা ব্লক উৎপাদন অংশীদারত্ব চুক্তির (পিএসসি) আওতায় দেশি-বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছে সিবিএম পদ্ধতিতে গ্যাস তোলার জন্য।
জামালগঞ্জ কয়লাখনিতে কী পরিমাণ গ্যাস থাকতে পারে, তার কতটা উত্তোলনযোগ্য—এসব খতিয়ে দেখার জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজটি করছে পেট্রোবাংলার নিযুক্ত ভারতীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মাইনিং অ্যাসোসিয়েটস প্রাইভেট লিমিটেড। গত ৫ জানুয়ারি, ২০১৬ তারা প্রকল্পের কাজ শুরু করে।

জয়পুরহাট জেলার জামালগঞ্জে স্থানভেদে প্রায় ৫০০ মিটার থেকে এক কিলোমিটার গভীরতায় খনিটির অবস্থান। সেখানে কয়লার মজুত প্রায় ১০০ কোটি মেট্রিক টন।

জাতিসংঘের সহায়তাপুষ্ট কয়লা অনুসন্ধান কর্মসূচির আওতায় ১৯৬২ সালে জামালগঞ্জ কয়লাখনিটি আবিষ্কৃত হয়। ১৯৯০-এর দশকে জার্মান প্রতিষ্ঠান বিএইচপি মিনারেল জামালগঞ্জ খনিতে গ্যাসের অবস্থানের বিষয়ে কিছু পরীক্ষা চালিয়েছিল। এর ফল বিশ্লেষণ করে বিএইচপি তখন বলেছিল, এই কয়লাখনিটিতে ছোট থেকে মাঝারি আকারের একটি গ্যাসক্ষেত্রের সমপরিমাণ গ্যাস থাকার সম্ভাবনা আছে।  

দেশে এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত পাঁচটি খনিতে মোট কয়লার পরিমাণ প্রায় ৩০০ কোটি মেট্রিক টন। দেশের অন্য খনিগুলোতে কয়লার অবস্থান যেখানে ১৫০ থেকে ৫০০ মিটার গভীরতার মধ্যে, সেখানে জামালগঞ্জে কয়লার অবস্থান ৬৪০ থেকে ১ হাজার ১৫৮ মিটার গভীরে। এই কারণে প্রচলিত সুড়ঙ্গ কিংবা উন্মুক্ত পদ্ধতির কোনোটিই এই খনি থেকে কয়লা তোলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ এর একটি পদ্ধতিতেও এত গভীর থেকে কয়লা তোলা কারিগরি ও বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক নয়। তাই সেখানে সিবিএম প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।