Studypress News

প্লুটোতে দুটি ‘বরফের আগ্নেয়গিরি’ আবিষ্কার

30 Mar 2016

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা সাম্প্রতিক সময়ে প্লুটোতে দুটি ‘বরফের আগ্নেয়গিরি’ আবিষ্কার করেছে। এ খবর জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ ডটকম’।

নাসার ভাষ্যমতে, সৌরজগতের বাইরের দিকে এটাই সবচেয়ে বড় আবিষ্কার। পৃথিবীর প্রথম বিমান নির্মাতা রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ের নামে নামকরণ করা হয়েছে আগ্নেয়গিরি দুটির। এগুলো প্রায় চার কিলোমিটার উচ্চতাসম্পন্ন এবং ১৫০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। নাসা আরো দাবি করেছে, আগ্নেয়গিরি দুটি সাম্প্রতিক সময়েই সক্রিয় ছিল।

পৃথিবী থেকে প্রায় ৩০০ কোটি (তিন বিলিয়ন) মাইল দূরে অবস্থিত প্লুটো গ্রহের পৃষ্ঠের প্রায় ৮০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে তোলা ছবিতে এই বরফের আগ্নেয়গিরির সন্ধান পাওয়া গেছে। এগুলোকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় বলা হয় ‘ক্রায়োভলকানো’। সাধারণ আগ্নেয়গিরির সঙ্গে এদের মূল পার্থক্য হচ্ছে, সাধারণ আগ্নেয়গিরি যখন বিস্ফোরণের সময় গলন্ত পাথর বা লাভা উদগীরণ করে, ক্রায়োভলকানো সে ক্ষেত্রে পানি, অ্যামোনিয়া অথবা মিথেন গ্যাস নিক্ষেপ করে থাকে।

আরও জানুন-

কিছু কিছু আগ্নেয়গিরি সুপ্ত আবার কিছু আছে সক্রিয়, বিপদজনক এবং কখনো কখনো বিধ্বংসী। এরা প্রকৃতির শক্তির উপস্থাপন করে যা সত্যিই মনে ত্রাসের সৃষ্টি করে। আবার এরাই এদের চারপাশে উর্বর মাটি সৃষ্টি করে। সারা পৃথিবী জুড়ে অনেক আশ্চর্য আগ্নেয়গিরি আছে যারা তাদের সৌন্দর্য ও মারাত্মক প্রকৃতির জন্য বিখ্যাত এবং তারা হাজার হাজার পর্বতারোহী ও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে। যারা অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন তারা আগ্নেয়গিরির দর্শনে যান। পৃথিবীর বিখ্যাত কিছু আগ্নেয়গিরি সম্পর্কে জেনে নিন-

১। মাউন্ট ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরি

ইতালির নেপলস উপকূলে মাউন্ট ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরিটি অবস্থিত। ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরিটি সুপরিচিত ৭৯ খ্রিষ্টাব্দে অগ্নুৎপাতের জন্য, যার ফলে পম্পেই ও হারকুলেনিয়াম নামের দুটি শহর নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এটি ইউরোপের একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরি যা সর্বশেষ ১৯৪৪ সালে সবেগে উৎক্ষিপ্ত হয়। এই আগ্নেয়গিরিটি এখন ভিসুভিয়াস ন্যাশনাল পার্কের অন্তর্ভুক্ত। স্থানীয় সংস্কৃতি ও পৌরাণিক কাহিনীতে ভিসুভিয়াসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আগ্নেয়গিরির শক্তি অনুভব করার এটি একটি আদর্শ স্থান এবং এখানে আপনি ধূমায়মান জ্বালামুখ দেখতে পাবেন।

২। মাউন্ট ফুজি আগ্নেয়গিরি

জাপানের টোকিও থেকে ১০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে মাউন্ট ফুজি আগ্নেয়গিরিটি অবস্থিত। এটি জাপানের সংস্কৃতির একটি প্রতীক। এটি জাপানের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। তুষারে আবৃত পাহাড় চুড়ার অপার সৌন্দর্য ও একে ঘিরে থাকা ৫টি লেকের সৌন্দর্য সমান ভাবেই আকর্ষণীয়। ফুজি একটি সক্রিয় স্ট্র্যাটো ভলকানো। এতে সর্বশেষ অগ্নুৎপাত হয়েছিলো ১৭০৭ সালে। এটি এখন ফুজি হাকুনি ইজু ন্যাশনাল পার্কের অন্তর্ভুক্ত। বছরে প্রায় ৩ লক্ষ পর্বতারোহী এর আকর্ষণে ছুটে যায়। জুন থেকে আগস্ট এর পরিদর্শনে যাওয়ার উপযুক্ত সময়।

৩। ক্রাকাটোয়া আগ্নেয়গিরি

ইন্দোনেশিয়ার উজুংকোলাং ন্যাশনাল পার্কে অবস্থিত ক্রাকাটোয়া আগ্নেয়গিরিটি অবস্থিত যা একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। ১৮৮৩ সালে এই আগ্নেয়গিরিটির অগ্নুৎপাত হয়েছিলো ভয়াবহ আকারে। যার ফলে একটি দ্বীপ ধ্বংস হয়ে যায় এবং নতুন আরেকটি সৃষ্টি হয়। এর বিস্ফোরণে ৩৫০০০ মানুষ মারা গিয়েছিলো। নতুন দ্বীপটি ১৯৩০ সালে গঠিত হয়। একে আনাক ক্রাকাটাউ বলে যার অর্থ ক্রাকাটোয়ার শিশু।

৪। কিলিমাঞ্জারো আগ্নেয়গিরি

আফ্রিকার সবচেয়ে উঁচু পর্বত কিলিমাঞ্জারোতে এই আগ্নেয়গিরিটি অবস্থিত। এটি কেনিয়ার বর্ডারের কাছাকাছি তাঞ্জানিয়ায় অবস্থিত। এর উচ্চতা ৫৮৯৫ মিটার।  এই সুপ্ত আগ্নেয়গিরিটির তিনটি স্বতন্ত্র কোণ আছে যা স্থানীয় অয়াক্কাজ্ঞা মানুষের শ্রদ্ধার স্থান। এর উচ্চতা সত্ত্বেও এই পাহাড়ে উঠা সহজ। প্রতিবছর ২০,০০০ দর্শনার্থী এই পাহাড়ে যায়। কিলিমাঞ্জারো ন্যাশনাল পার্ক পাহাড়ের ঢালে অবস্থিত যা জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ।

আরো কিছু বিখ্যাত আগ্নেয়গিরি হচ্ছে – মেক্সিকোর পপোকেটপেটেল আগ্নেয়গিরি, ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট ব্রোমো, আমেরিকার সেন্ট হেলেন্স, আইসল্যান্ডের থ্রিনুকাগিগুর, কোস্টারিকার অ্যারেনাল আগ্নেয়গিরি, ইতালির মাউন্ট ইটনা ইত্যাদি।