Studypress News

জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি মইনুল হোসেন আর নেই

14 Nov 2014

জাতীয় স্মৃতিসৌধের ডিজাইনার স্থপতি সৈয়দ মইনুল হোসেন আর নেই। রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে তিনি ইন্তিকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।   
১৯৫২ সালের ৫ মে মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ীর দামপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ মইনুল হোসেন। তার বাবা সৈয়দ মুজিবুল হক ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে ইতিহাস পড়াতেন। ছেলেবেলায় মইনুল চেয়েছিলেন প্রকৌশল বিষয়ে পড়তে। 
১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ সরকারের গণপূর্ত বিভাগ মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহীদের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এরপর নকশা আহ্বান করা হয়। তখন ২৬ বছরের তরুণ স্থপতি মইনুল স্মৃতিসৌধের নকশা জমা দেন। মোট ৫৭ জন প্রতিযোগী স্মৃতিসৌধের ডিজাইন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এবং তার মধ্যে স্থপতি মইনুল হোসেনের ডিজাইনটি শ্রেষ্ঠ বিবেচিত হয়। নিচের মূল ভিত্তি থেকে ওপরের দিকে উঠে-যাওয়া সাতটি দেয়ালসদৃশ ত্রিকোণ কলাম। কলামগুলো বিভিন্ন উচ্চতার ও আলাদা-আলাদাভাবে পাশাপাশি ওপরের দিকে উঠে গেছে, যার সবচেয়ে উঁচু কলামটি ১৫০ ফুট। বিভিন্ন দিক থেকে এটি ভিন্ন ভিন্ন আকারে দৃশ্যমান হয়। সামনের দিক থেকে দেখলে মনে হবে যেন একক-শুভ্র এক শৈল্পিক স্থাপনা আকাশ স্পর্শ করার জন্য মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে গর্বিত ভঙ্গিমায়; সামনের লেকের পানিতে তার ছায়া এক অপূর্ব দৃশ্য তৈরি করেছে। আবার পাশ থেকে দেখলে মনে হয়, আকাশে ডানা মেলে-দেয়া একঝাঁক শুভ্র-বলাকা যেন! বিজয়ের আনন্দে উদ্ভাসিত সমগ্র বাংলাদেশের প্রতিভূ জাতীয় স্মৃতিসৌধ।
১৯৭৬ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মইনুল হোসেন ৩৮টি বড় বড় স্থাপনার নকশা করেন। এর মধ্যে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, ভোকেশনাল টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ভবন, চট্টগ্রাম ইপিজেড, উত্তরা মডেল টাউন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার খাদ্য গুদামের নকশা, কফিল উদ্দিন প্লাজা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস ভবন, ঢাকা শহরের বিভিন্ন বেসরকারি আবাসন প্রকল্পের নকশা করেছেন তিনি। এই মহান স্থপতিকে ১৯৮৮ সালে সরকার ‘একুশে পদকে’ ভুষিত করে।