Studypress News
বৈদ্যুতিক বাল্ব: যুগান্তকারী আবিষ্কারের গল্প
21 Oct 2024

আজকের দিন, ২১ অক্টোবর, ইতিহাসের পাতায় উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে টমাস আলভা এডিসনের বৈদ্যুতিক বাল্ব আবিষ্কারের কারণে। ১৮৭৯ সালের এই দিনে, এডিসন তার বৈদ্যুতিক বাল্বের পেটেন্টের জন্য আবেদন করেন—এমন একটি উদ্ভাবন যা গোটা বিশ্বকে রাতের আঁধারে আলোকিত করেছিল। এডিসনের এই আবিষ্কার শুধু বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেই নয়, সামাজিক অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সূচনা করে। তার বৈদ্যুতিক বাল্বের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক আলো মানুষকে রাতের বেলায় কাজ করার সুযোগ দেয়, যা শিল্পবিপ্লবের অগ্রগতিতে বিশাল ভূমিকা রাখে।
আমরা হয়তো অনেকেই জানি প্রথম ইলেকট্রিক বাল্ব টমাস আলভা এডিসনের আবিষ্কার করেছেন। কিন্তু এটা আসলে পুরোপুরি ভুল ধারণা। বহুকাল পুর্ব থেকে গ্যাস ও আগুনের বাতির বিকল্প নিয়ে গবেষণা চলছিলো। ১৮০০ সালে ইতালিয়ান বিজ্ঞানী আলেসান্দ্রো ভোল্টা এ বিষয় নিয়ে গবেষণা করেছে। এছাড়াও বৃটিশ বিজ্ঞানী হামপ্রে ড্যাভি, হেনরি উডওয়ার্ড এবং ম্যাথু ইভান্স পর্যন্ত চেষ্টা করেছেন বিদ্যুৎ ব্যবহার করে বাতি তৈরী জালানোর। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা সফল হলেও পুরোপুরি সফল হয়নি। কারণ তারা সাধারণ মানুষের ব্যবহার যোগ্য এবং ব্যবসায়িক ভাবে বিক্রীর মতো করে বাতি তৈরি করতে পারে নি। কথিত আছে যে টমাস আলভা এডিসনকেও সফল ভাবে এই বাতি বানাতে গিয়ে ১০ হাজার বার এর বেশি ব্যর্থ হতে হয়েছে। এই প্রসঙ্গে টমাস আলভা এডিসন যা বলেছিলেন তা হলো আমি ১০ হাজার বার ব্যর্থ হইনি আমি এটি কাজ না করার ১০ হাজারটি কারণ বের করেছি মাত্র।
উডওয়ার্ড ও ইভান্স এর গবেষণার স্বত্ব বা কপিরাইট কিনে নেয় টমাস। তাদের প্রজেক্টের ওপর গবেষণা চালাতে থাকেন। ১৮৭৯ সালে তিনি আধুনিক লাইট বাল্বের সফল নকশা করতে সফল হন। অন্য সবার মতো টমাসের ও কাজটি করতে গিয়ে বার বার ব্যর্থতার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
কিন্তু অন্যরা ব্যর্থ হয়ে গবেষণা থামিয়ে দিয়েছে কিন্তু টমাস তা করেনি। তিনি গবেষণা চালিয়ে গিয়েছেন সফলতার আগ পর্যন্ত। সফল হবার পর তিনি আধুনিক লাইট বাল্বের পেটেন্টটি নিজ নামে করে নেয়।
টমাস এডিসন ছোটবেলা থেকেই বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রতি অনুরাগী ছিলেন। তার প্রকৃতি ছিল অনুসন্ধিৎসু এবং তিনি বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে সবসময় নতুন কিছু শিখতে আগ্রহী ছিলেন। মাত্র ১২ বছর বয়সে রেলগাড়িতে সংবাদপত্র বিক্রির কাজ করার সময়, একটি ছোট গবেষণাগার গড়ে তোলেন এবং সেখানে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা চালাতেন। এই আগ্রহ থেকেই তিনি পুরো জীবন নানান উদ্ভাবনে লিপ্ত ছিলেন এবং একের পর এক সাফল্য অর্জন করেন। টমাস আলভা এডিসন ছিলেন সর্বমোট ১০৯৩ টি আবিষ্কারের অধিকারী। সর্বকালের সর্বসেরা আবিষ্কারগুলো যেমন-বৈদ্যুতিক বাল্ব, আধুনিক ব্যাটারি, কিনটোগ্রাফ ক্যামেরা যা প্রথম যুগের ভিডিও ক্যামেরা হিসেবে পরিচিত এবং সাউন্ড রেকর্ডিং ইত্যাদি তার শ্রম ও মেধার অবদান। এসব বিখ্যাত আবিষ্কারের বাইরেও তিনি আরো নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের আবিস্কারক। তিনি যা যা আবিষ্কার করেছেন তার যে সব সফল হয়েছে এমনটাও নয়। তার রয়েছে কিছু অসফল আবিষ্কার ও। আর এসব অসফল আবিষ্কারের সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০০-৬০০ ।
৮৪ বছর বয়সী মহান বৈজ্ঞানিক টমাস ১৯৩১ সালের ১৮ ই অক্টোবর ওয়েস্ট অরেঞ্জ এর নিজ বাড়িতে মারা যান। তার মৃত্যুর কিছুক্ষন পর সারা বিশ্বের সব প্রান্তে কিছুক্ষণের জন্য ইলেকট্রিসিটি বন্ধ করে এই আলোর কারিগর টমাস আলভা এডিসনকে সম্মান জানায়।
Important News

Highlight of the week
