Studypress News

ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসাবে এভারেস্ট জয় করলেন বাবর আলী

19 May 2024

‣ পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ালেন চট্টগ্রামের বাবর আলী। ১৯ মে নেপালের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে আটটায় তিনি চূড়ায় পৌঁছান।


‣ বাংলাদেশ থেকে বাবর আলী নেপালের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন গত ১ এপ্রিল। প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করে ৪ এপ্রিল কাঠমান্ডু থেকে উড়ে যান লুকলা বিমানবন্দরে। এরপর পথচলা শুরু করেন এভারেস্ট বেজক্যাম্পের উদ্দেশে। সেখানে পৌঁছান ১০ এপ্রিল।


‣ ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এভারেস্ট অভিযানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো উচ্চতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া। এ জন্য একাধিকবার উচ্চতায় ওঠানামা করেছেন বাবর। ২৬ এপ্রিল বেজক্যাম্প থেকে এভারেস্টের ক্যাম্প ২ পর্যন্ত ঘুরে এসে উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পর্ব সমাপ্ত করেন। এরপর অনুকূল আবহাওয়ার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয় বাবরকে।


‣ ১৪ মে মাঝরাতে বেজক্যাম্প থেকে বাবরের যাত্রা শুরু হয় চূড়া অভিমুখে। প্রথম দিনেই সরাসরি উঠে যান ক্যাম্প ২-এ। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেখানে দুই রাত কাটিয়ে বাবর ১৮ মে উঠে যান ক্যাম্প ৩ এবং ১৯ মে পৌঁছান ক্যাম্প ৪-এ। ২৬ হাজার ফুট উচ্চতার এই ক্যাম্পের ওপরের অংশকে বলা হয় ‘ডেথ জোন’।


‣ ১৮ মে মাঝরাতে আবারও শুরু হয় বাবরের যাত্রা। ১৯ মে ভোরের প্রথম আলোয় ২৯ হাজার ৩১ ফুট উচ্চতার মাউন্ট এভারেস্টের শীর্ষে ওড়ান বাংলাদেশের পতাকা। 


‣ পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখর মাউন্ট এভারেস্টে প্রথম অভিযান পরিচালিত হয় আজ থেকে শতাধিক বছর আগে। ১৯৫৩ সালের ২৯ মে নেপালের শেরপা তেনজিং নোরগেকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছিলেন নিউজিল্যান্ডের পর্বতারোহী এডমন্ড হিলারি। 

‣ ২০১০ সালের ২৩ মে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্টের শীর্ষে ওঠেন মুসা ইব্রাহীম। 

‣ ২০১১ ও ২০১২ সালে দুবার এভারস্ট জয় করেন এম এ মুহিত। 

‣ প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে ২০১২ সালের ১৯ মে এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করেন নিশাত মজুমদার। একই মাসের ২৬ মে ওয়াসফিয়া নাজরীন জয় করেন এভারেস্ট। 

‣ ২০১৩ সালের ২০ মে এভারেস্টজয়ী পঞ্চম বাংলাদেশি সজল খালেদ এভারেস্টচূড়া থেকে নেমে আসার সময় মারা যান।


‣ ২০১৩ সালের পর বাংলাদেশি পর্বতারোহীদের এভারেস্ট অভিযানে নেমে আসে খরা। আজ ১১ বছরের সেই খরা কাটিয়ে এভারেস্টের চূড়ায় বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা উড়ালেন বাবর আলী। তবে বাবরের অভিযান এখানেই শেষ নয়! তাঁর এবারের অভিযানের লক্ষ্য শুধু এভারেস্ট নয়, এর সঙ্গে লাগোয়া পৃথিবীর চতুর্থ শীর্ষ পর্বত লোৎসেও। আজ ক্যাম্প ৪–এ নেমে মাঝরাতে আবার শুরু করবেন দ্বিতীয় লক্ষ্যের পথে যাত্রা। 


‣ বাবরের ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের পক্ষ থেকে প্রধান অভিযান সমন্বয়ক ফরহান জামান বলেন, ‘বাবর আলীর এই সাফল্য শুধু তাঁর ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং এটি পুরো বাংলাদেশের জন্য এক গর্বের বিষয়। এটি আমাদের দেশের তরুণদের আরও বড় স্বপ্ন দেখার এবং সেগুলো পূরণ করার জন্য অনুপ্রাণিত করবে। এ অভিযানের পেছনে ছিল অসংখ্য মানুষের অবদান এবং স্বপ্ন। আমরা তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’



পেশায় চিকিৎসক, নেশায় পর্বতারোহণ


‣ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন ৩৩ বছর বয়সী বাবর আলী। এরপর শুরু করেছিলেন চিকিৎসা পেশা। তবে থিতু হননি। ডাক্তারি ছেড়ে দেশ-বিদেশ ঘোরা শুরু করেন।


‣ ২০২৩ সালের ১৩ এপ্রিল কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর থেকে সাইকেলযাত্রা শুরু করেছিলেন বাবর আলী। এক মাসের চেষ্টায় প্রায় চার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী গিয়ে থেমেছিলেন তিনি। পথে যেতে যেতে ১৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করার সুযোগ হয়েছিল তাঁর। এর আগে ২০১৯ সালে পরিবেশ রক্ষার ব্রত নিয়ে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা হেঁটে পার করেন তিনি। এসব অভিযান নিয়ে লিখেছেন বই।