Studypress News

এআই কর্মক্ষেত্রে হুমকি নয়, সহায়ক হবে: আইএলও

28 Aug 2023

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে এখনো সারা বিশ্বে গবেষণা চলছে। এআই এলে অনেকেই চাকরি হারাবেন বলে বলা হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) সম্প্রতি এক সমীক্ষায় বলেছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সারা বিশ্বে চাকরির বাজারে ব্যাপক বিপর্যয় ঘটে যাবে। এ সময়ে বিশ্বের ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ চাকরি হারাবেন। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের পরিবর্তে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে এসব কাজ চালাবে বলে এ আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বলছে, এআই চাকরির জন্য হুমকি নয়, বরং পরিপূরক হতে পারে। এআই কারও চাকরি দখল করে নেবে না। সম্প্রতি জেনারেটিভ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে করা এক গবেষণায় আইএলও এই পূর্বাভাস দিয়েছে। সংস্থাটির তিনজন সামাজিক বিজ্ঞানী এই গবেষণা প্রতিবেদন লিখেছেন।গত বছরের নভেম্বরে চ্যাটজিপিটির চালু হওয়ার পর থেকেই এআইয়ের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনা চলছে।

এই চ্যাটবট সহজেই সাড়া দেয় এবং লেখা তৈরি করে দিতে পারে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও মানুষ এটিকে নানা উপায়ে ব্যবহার করছে। এর মধ্যে আছে কর্মপ্রবাহ পরিচালনা করা, প্রশ্নের দ্রুত উত্তর দেওয়া, কোড লেখা, প্রবন্ধ লেখা, ছুটির পরিকল্পনা করা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত কনটেন্ট তৈরি করা।

আইএলওর প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে করণিকের কাজ সবচেয়ে বেশি করা হয়। আর অন্য পেশার ক্ষেত্রে বিশেষ করে ব্যবস্থাপক, পেশাদার ও প্রযুক্তিবিদদের কাজের সামান্য অংশই প্রযুক্তি করতে পারে। আর প্রযুক্তি এই সামান্য কাজ করলেও তাতে অনেক বেশি ঝুঁকি থেকে যায়।

গবেষকেরা বলছেন, ‘এর ফলস্বরূপ প্রযুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব হিসেবে কাজ বাড়ানোর সম্ভাবনা আছে। সব পেশা বা কাজকে স্বয়ংক্রিয় করার চেয়ে কিছু কাজকে হয়তো স্বয়ংক্রিয় করে দেবে। গবেষণায় বর্তমান অর্থনৈতিক কাঠামো ও বিদ্যমান প্রযুক্তিগত ফাঁকগুলোর সঙ্গে যুক্ত উন্নয়নের বিভিন্ন স্তরে দেশগুলোর ওপর প্রভাবের উল্লেখযোগ্য পার্থক্য নথিভুক্ত করেছে।

ধনী দেশগুলোয় মোট কর্মসংস্থানের ৫ দশমিক ৫ শতাংশে এআইয়ের স্বয়ংক্রিয় প্রভাব আছে। যেখানে নিম্ন আয়ের দেশগুলোয় এই ঝুঁকি মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশের কাছাকাছি। গবেষকেরা বলছেন, সঠিক নীতির সঙ্গে এআই উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা দিতে পারে।

তবে এআইয়ের সম্ভাব্য প্রভাব নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে আলাদা হতে পারে। কর্মক্ষেত্রের কাজ স্বয়ংক্রিয় হলে নারী পেশাজীবীদের দ্বিগুণেরও বেশি অংশের প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কারণ, উচ্চ ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় কেরানির কাজে নারীদের অতিরিক্ত প্রতিনিধিত্বের কারণে এটি ঘটতে পারে।

যেহেতু করণিকের চাকরি ঐতিহ্যগতভাবে অর্থনীতির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে নারীদের কর্মসংস্থানেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ একটি উৎস, তাই এআইয়ের ব্যাপক ব্যবহারের কারণে নিম্ন আয়ের দেশগুলোয় নির্দিষ্ট করণিকের চাকরি হুমকির মুখে পড়ে।

তবে গবেষণা প্রতিবেদনটির শেষে উল্লেখ করা হয়েছে, এআইয়ের আর্থসামাজিক প্রভাব মূলত নির্ভর করবে কীভাবে এটি গৃহীত এবং চালু করা হয়, তার ওপর।