Studypress News

গড় আয়ু বেড়ে ৭২.৮ বছর

10 Jul 2021

দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। বর্তমানে আয়ু দুই মাস বেড়ে ৭২ বছর ৮ মাসে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষের গড় আয়ু বেড়ে হয়েছে ৭১ বছর ২ মাস; আর নারীদের ৭৪ বছর ৫ মাস। এর আগের ২০১৯ সালে দেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৭২ বছর ৬ মাস। ২০১৮ সালে ছিল ৭২ বছর ৩ মাস। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘রিপোর্ট অন বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২০’ হালনাগাদ জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে।

মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিক অব বাংলাদেশ (এমএসভিএসবি) তৃতীয় পর্যায় প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের ২ হাজার ১২টি নমুনা এলাকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
বিবিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুরুষের তুলনায় নারীদের গড় আয়ু বেশি বেড়েছে। ২০২০ সালে পুরুষের গড় আয়ু বেড়ে ৭১.২ বছর ও নারীদের ৭৪.৫ বছরে দাঁড়ায়। যা ২০১৯ সালে ছিল যথাক্রমে ৭১.১ বছর ও ৭৪.২ বছর।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত পাঁচ বছরে গড়ে প্রতি বছর ০.২৪ বছর হারে আয়ু বেড়েছে। অর্থাৎ পাঁচ বছরে গড় আয়ু ১.২ বছর বেড়েছে। যা পুরুষের ক্ষেত্রে ০.৯ বছর ও নারীদের ক্ষেত্রে ১.৬ বছর। সর্বশেষ গত ১লা জানুয়ারি ২০২১ সাল পর্যন্ত দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯১ লাখ। গত বছরের ৩০শে জুন পর্যন্ত দেশের মোট জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৮২ লাখ। দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে নারীর তুলনায় পুরুষের জন্মহার কিছুটা বেড়েছে।  দেশে বর্তমানে মোট পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার আর নারীর সংখ্যা ৮ কোটি ৪০ লাখ ৩০ হাজার।
প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন, এখন চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। মানুষ সহজেই চিকিৎসা নিতে পারছেন। তাছাড়া খাদ্যগ্রহণ আগের চেয়ে বেড়েছে। পুষ্টিগ্রহণের ক্ষেত্রে তুলনামূলক অগ্রগতি হয়েছে।
২০২০ সালের হিসাবে প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল ৭২.৮ বছর, যা ২০১৯ সালে ছিল ৭২.৬ বছর।  দেশে গড় আয়ু ২০১৮ সালে ৭২.৩ বছর, ২০১৭ সালে ৭২ বছর এবং ২০১৬ সালে ৭১.৬ বছর। প্রত্যাশিত গড় আয়ু পুরুষের চেয়ে নারীদের বেশি। ২০২০ সালে পুরুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু হচ্ছে ৭১.২ বছর। ২০১৯ সালে ছিল ৭১.১ বছর। ২০১৮ সালে ৭০.৮ বছর, ২০১৭ সালে ৭০.৬ বছর এবং ২০১৬ সালে ছিল ৭০.৩ বছর। অন্যদিকে নারীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ২০২০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে প্রত্যাশিত গড় আয়ু হচ্ছে ৭৪.৫ বছর, ৭৪.২ বছর, ৭৩.৮ বছর, ৭৩.৫ বছর এবং ৭২.৯ বছর। জরিপকালীন তথ্য অনুযায়ী জনসংখ্যার
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার ১.৩০ শতাংশ। আগের বছর ছিল ১.৩২ শতাংশ। তার আগের বছর ছিল ১.৩৩ শতাংশ। জনসংখ্যার ঘনত্ব আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। এখন প্রতি বর্গকিলোমিটারে বসবাস করে ১ হাজার ১৪০ জন। আগের বছর ছিল ১ হাজার ১২৫ জন।
জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হার বাড়েনি। নমুনা এলাকায় এই হার ৬৩.৯ শতাংশ। শহর এলাকায় মহিলারা ৬৪.৭ শতাংশ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করে। অন্যদিকে গ্রামে ৬৩.১ শতাংশ মহিলা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণের আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের হার বেড়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মহামারির মধ্যে গত বছর প্রতি হাজার মানুষের মধ্যে ৫.১ জন মারা গেছে। তার আগের বছরে এই হার ছিল ৪.৯ জন। অর্থাৎ গত বছরে আগের বছরের তুলনায় মৃত্যুহার কিছুটা বেড়েছে।
তবে শিশু মৃত্যুহার অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি হাজারে ২১টি শিশু মারা যাচ্ছে। আর মাতৃ মৃত্যুতে আরও কিছুটা উন্নতি হয়ে প্রতি হাজারে ১.৬৩ জন হয়েছে। আগের বছরে এটা ছিল ১.৬৫ জন।
বিয়ের গড় বয়স ২৪.২ মাস অপরিবর্তিত রয়েছে। আগের বছরও একই হার ছিল।
৭ বছর ও তদূর্র্ধ্ব জনসংখ্যার শিক্ষার হার এখন ৭৫.২ শতাংশ। ২০১৫ সালে এই হার ছিল ৬৩.৬ শতাংশ। আর ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনসংখ্যার শিক্ষার হার ৭৫.৬ শতাংশ।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের ৯৮.৩ শতাংশ মানুষ বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করছে। আগের বছর পর্যন্ত এই হার ছিল ৯৮.১ শতাংশ।
বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে ৯৬.২ শতাংশ পরিবার। আগের বছর পর্যন্ত এই হার ছিল ৯৩.৫ শতাংশ পরিবার।
এই সময় পর্যন্ত স্যানিটারি ল্যাট্রিন ব্যবহার করে ৮১.৫ শতাংশ পরিবার। গত বছরও এই হার একই ছিল।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন প্রতি হাজারে প্রতিবন্ধী রয়েছে ৮.৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৯.৩ জন, আর নারী ৭.৬ জন।