Studypress News
জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
10 Dec 2015
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামাজিক মাধ্যম অন্য যে কোন বিষয়ের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী উপাদান হয়ে দাড়িয়েছে। কয়েকটি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সম্পর্কে জেনে নিই।
১। ফেসবুক (Facebook)
প্রতিষ্ঠিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০০৪;
প্রতিষ্ঠাতা: মার্ক জাকারবার্গ (যুক্তরাষ্ট্র);
সদর দপ্তরঃ মেনলো পার্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
নোটঃ মার্ক জাকারবার্গ হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন তার কক্ষনিবাসী ও কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ের ছাত্র এডওয়ার্ডো সেভারিন, ডাস্টিন মস্কোভিত্স এবং ক্রিস হিউজেসের যৌথ প্রচেষ্টায় ফেসবুক নির্মাণ করেন। ওয়েবসাইটটির সদস্য প্রাথমিকভাবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, কিন্তু পরে সেটা বোস্টন শহরের অন্যান্য কলেজ, আইভি লীগ এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়। আরো পরে এটা সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, হাই স্কুল এবং ১৩ বছর বা ততোধিক বয়স্কদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সারাবিশ্বে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এটি।
২। টুইটার (Twitter)
প্রতিষ্ঠিতঃ মার্চ ২১, ২০০৬;
প্রতিষ্ঠাতা: জ্যাক ডোরসে (যুক্তরাষ্ট্র)
সদর দপ্তরঃ সান ফ্রান্সিসকো, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র।
নোটঃ টুইটার সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থা ও মাইক্রোব্লগিংয়ের একটি ওয়েবসাইট, যেখানে ব্যবহারকারীরা সর্বোচ্চ ১৪০ অক্ষরের বার্তা আদান-প্রদান ও প্রকাশ করতে পারেন (এখন আরো বর্ধিত হয়েছে) । এই বার্তাগুলোকে টুইট বলা হয়ে থাকে। টুইটারের সদস্যদের টুইটবার্তাগুলো তাদের প্রোফাইল পাতায় দেখা যায় (যদিনা সদস্য সেটা কে দেখতে পাবে তা বাছাই করেন)। টুইটারের সদস্যরা অন্য সদস্যদের টুইট পড়ার জন্য নিবন্ধন করতে পারেন। এই কাজটিকে বলা হয় অনুসরণ করা। কোনো সদস্যের টুইট পড়ার জন্য যারা নিবন্ধন করেছে, তাদেরকে বলা হয় অনুসরণকারী। ২০০৬ সালের মার্চ মাসে টুইটারের যাত্রা শুরু হয়। তবে ২০০৬ এর জুলাই মাসে জ্যাক ডর্সি আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন। টুইটার সারা বিশ্ব্জুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। টুইটার বিশ্বের দ্বিতীয় বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
৩। গুগল+ (Google+)
চালু: ২৮ জুন ২০১১;
মালিকঃ গুগল;
নোটঃ গুগল+ (Google+, Google Plus, G+) হচ্ছে গুগলইনকর্পোরেশনের একটি সোশাল নেটওয়ার্কিং বা সামাজিক যোগাযোগ ওয়েব সেবা। গুগল এই সেবাটি ২৮ জুন ২০১১ তে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করে। এই সেবাটির মাধ্যমে গুগলের অন্যান্য সেবাগুলো ব্যবহার করা যায়। ধারণা করা হয়,৭৫০ মিলিয়ন ব্যবহারকারীর অপর সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেইসবুকের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গুগল এই সেবা চালু করে।
৪। স্কাইপ (Skype)
প্রতিষ্ঠিতঃ আগস্ট ২০০৩;
মূল উদ্ভাবকঃ প্রিত কাসিসেলু এবং জন টালিন;
নোটঃ স্কাইপ (Skype) একটি ভিওআইপি সেবা এবং সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন। এই সেবার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে পরস্পরের সাথে ভয়েস, ভিডিও এবং তাৎক্ষণিক বার্তার মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারে। একজন স্কাইপ ব্যবহারকারী অন্য স্কাইপ ব্যবহারকারীকে বিনামূল্যে কল করতে পারে। ২০১১ সালে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন ৮·৫ বিলিয়ন ডলারে স্কাইপ লিমিটেডকে কিনে নেয়। ২০০৩ সালে ডেনমার্কের ধমিজা, জানুজ ফ্রিজ এবং সুইডেনের নিকলাস জেনস্ট্রম স্কাইপ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে এস্তোনিয়ার আহতি হেইলা, প্রীত কাসেসালু এবং জান তালিন তাদের সাথে স্কাইপ সফটওয়্যারের উন্নতি সাধন করেন। পিয়ার-টু-পিয়ার ফাইল শেয়ারিং সফটওয়্যার কাজা'র মাধ্যমে নেপথ্যে থেকে কাজ করেন তারা। ২০০৩ সালের আগস্ট মাসে জনসমক্ষে স্কাইপ সফটওয়্যারের প্রথম বেটা সংস্করণ প্রকাশ করা হয়।
৫। ভাইবার (Viber)
প্রতিষ্ঠিতঃ ডিসেম্বর ২, ২০১০;
নোটঃ ভাইবার (Viber) হল একটি তাৎক্ষণিক বার্তা প্রেরক এবং ভয়েস ওভার আইপি (ভিওআইপি) স্মার্টফোনের জন্য অ্যাপ্লিকেশন যা মিডিয়া দ্বারা বিকশিত হয়েছে। তাৎক্ষণিক বার্তা প্রেরক ছাড়াও, ব্যবহারকারীরা ছবি, ভিডিও এবং অডিও মিডিয়া বার্তা বিনিময় করতে পারেন। ম্যাক ওএস,এনড্রয়েড, ব্ল্যাকবেরি ওএস, আইওএস, সিরিজ ৪০, সিমবিয়ান, বাডা, উইন্ডোজ ফোন, এবং মাইক্রোসফট উইন্ডোজ জন্য ক্লায়েন্ট সফটওয়্যার পাওয়া যায়। একটি ৬৪-বিট লিনাক্স সংস্করণ .deb (ডেবিয়ান ও উবুন্টু) এবং .rpm (ফেডোরা ও ওপেনসুয্যে) উভয় প্যাকেজ ফরম্যাটের পাওয়া যায়।
৬। হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp)
প্রতিষ্ঠিতঃ ২০০৯;
প্রতিষ্ঠাতা: Jan Koum, Brian Acton;
সদর দপ্তরঃ মাউন্টেইন ভিউ, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
নোটঃ হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেঞ্জার স্মার্টফোনের জন্য জনপ্রিয় একটি ম্যাসেঞ্জার। বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমের স্মার্টফোনে এই ম্যাসেঞ্জার ব্যবহার করা যায়। শুধু চ্যাটই নয়, এ ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে ছবি আদান-প্রদান, ভিডিও ও অডিও মিডিয়া বার্তাও আদান-প্রদান করা যায়। ম্যাসেঞ্জারটি অ্যাপলের আইওএস, ব্ল্যাকবেরি, অ্যান্ড্রয়েড, সিমবিয়ান ও উইন্ডোজ ফোনে ব্যবহার করা যায়। ব্যবহারকারীর ফোনে থাকা ফোন নম্বর তালিকা থেকে হোয়াটসঅ্যাপ স্বয়ংক্রিয়ভাবে নম্বর সিংকক্রোনাইজ করে নেয়। ফলে আলাদা করে আইডি যোগ করার প্রয়োজন হয় না। স্মার্টফোনে বিনা মূল্যে ব্যবহারের উপযোগী ম্যাসেঞ্জারটিতে ব্যক্তিগত হালনাগাদ, ব্যবহারকারী যেখান থেকে চ্যাট করছেন সে এলাকা, গ্রুপ তৈরি, গ্রুপের জন্য আলাদা আইকন তৈরি করা যায়। হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বছর অ্যাপ্লিকেশনটিতে ভিডিও কল সুবিধা আসবে এবং ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০০ কোটিতে পৌঁছাবে। ২০০৯ সালে ইয়াহুর সাবেক কর্মী ব্রায়ান অ্যাক্টন ও জান কউম মিলে হোয়াটসঅ্যাপ তৈরি করেন। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানটিতে ৫৫ জন কর্মী রয়েছেন। সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপ কেনার সময় ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ জানান, প্রতিদিন ১০ লাখ মানুষ হোয়াটসঅ্যাপ ডাউনলোড করছেন এবং এই অ্যাপটির ৪৫ কোটি ব্যবহারকারী রয়েছেন।