Studypress News

ভারত-আমেরিকার মধ্যে স্বাক্ষরিত হল বেকা (BECA) চুক্তি

02 Nov 2020

'বেসিক এক্সচেঞ্জ কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্ট' সহ পাঁচটি চুক্তিতে সই করে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই চুক্তির মাধ্যমে লাদাখে এবং দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিংয়ের গতিবিধি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য আদান প্রদান করার ক্ষেত্রে একটি সমঝোতা আসতে চলেছে দুই দেশ। 
'বেসিক এক্সচেঞ্জ কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্ট'-এর মাধ্যমে ভারত আমেরিকার থেকে এমকিউ-৯বি ড্রোন পাবে। এর ফলে লাদাখে চিনের উপর আরও কড়া নজরদারি চালাতে পারবে ভারত। এবং প্রয়োজনে এই ড্রোনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট স্থানে হানা আনতেও সক্ষম হবে ভারত। তাছাড়া আফগানিস্তানে তালিবান শান্তি চুক্তি নিয়েও কথা হয় এদিনের বৈঠকে। এছাড়া আমেরিকার তরফে ভারত মহাসাগরে একটি নিরাপত্তাবলয় তৈরির প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে৷

বেসিক এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট বা বেকা (BECA) চুক্তি। বেকা চুক্তি বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার কারণগুলির হল-

এক)

ভারত ও চিন এই দুটি রাষ্ট্রই বিশ্বের মানচিত্রে প্রবল শক্তিধর। তারপর এই দুই রাষ্ট্রের সীমান্তে মুখোমুখি সেনা সমাবেশ বেশ কিছুদিন থেকে লাদাখ অঞ্চল। সেখানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে এই দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের লড়াই। এই পরিস্থিতিতে ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় চিনের এই দাদাগিরিকে একদম বরদাস্ত করছে না। চীনের দাদাগিরি রুখতেই এই চুক্তি।

দুই)

লাদাখে সামরিক শক্তি নিয়ে ভারত ও চীন যুদ্ধের সব প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন ভারত চিনের ব্ল্যাকমেইল করার ইতিহাসের কথা মাথায় রেখে সামরিক শক্তির দিক দিয়ে খুব শক্তিশালী আমেরিকার কাছাকাছি আসার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।

তিন)

এই চুক্তিতে যেটা সবথেকে দরকার তাহল ভারতীয় সেনা সুবিধার জন্য শত্রুর সমস্ত প্রস্তুতির তথ্য যেকোনো উপায়ে জোগাড় করা। তাই ওই চুক্তি হলে সবথেকে গোপন কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে গোপন সন্ত্রাসবাদী ও প্রতিবেশী দেশটির প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি নিয়ে যে সব তথ্য পাওয়া যাবে তা অত্যন্ত নির্ভুল এটা সম্পূর্ণ মার্কিন উপগ্রহ দ্বারা পরিপূরকযুক্ত, শত্রুর ভূ-স্থান সংক্রান্ত তথ্য নেভিগেশন এবং আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে, সামরিক ঘাঁটির সঠিক তথ্য জোগাড় করতে খুব সহায়তা করতে পারে, এই চুক্তির হলে সেই সব তথ্য ভারত ও আমেরিকার সঙ্গে আদানপ্রদান করতে পারবে। তাতে ভারতের সেনার খুব সুবিধা হবে।

চার)

'বেকা' চুক্তির মাধ্যমেই ভারত আমেরিকার কাছথেকে কয়েকটি ড্রোন-সহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনতে চলেছে। এই উপকরণ গোপন সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ ও প্রতিবেশী দেশগুলির সামরিক প্রস্তুতির ওপর নজর রাখতে কৃত্রিম উপগ্রহের দেওয়া তথ্যাদিও এক চুক্তির মাধ্যমে দেওয়া-নেওয়া করতে চায়। যেমন কারাকোরাম পাস হল এমন একটি দুর্গম এলাকা যেখানে খুব কাছাকাছি চিনের ফৌজ, পাকিস্তানের সেনা এবং ভারতীয় সেনা আছে। ভারত যদি রাস্তা তৈরি করে ভেহিকেল চালানো শুরু করলে গোটা এলাকার কৌশলগত সুবিধা চলে আসবে এবং তাতে চাপে পড়বে চিন এবং পাকিস্তান। আর এই সুযোগ ভারত যাতে না নিতে পারে, সেই জন্যই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর রাস্তা তৈরির বিরোধিতা করছে চিন যেনটেন প্রকারে। ভারতে নিজের জায়গায় রাস্তা বা উন্নয়ন বন্ধ রাখা ভারতের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই চীনকে চাপে রাখতে 'বেকা'এই ধরনের চুক্তির ফলে ভারতের একটু হলেও সুবিধা হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।