Studypress News
বাংলার ইতিহাসঃ বাংলায় মুসলমান শাসনের সূচনা-১
16 Jul 2020
ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি
> তেরো শতকের শুরুতে তুর্কী বীর ইখতিয়ারউদ্দীন মুহাম্মদ বখতিয়ার খলজি বাংলার উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাংশে সেন শাসনের অবসান ঘটিয়ে মুসলমান শাসনের সূচনা করেন। তিনি আফগানিস্তানের গরমশির বা আধুনিক দশত-ই-মার্গের অধিবাসী ছিলেন। ইতিহাসে তিনি বখতিয়ার খলজি নামেই বেশি পরিচিত। তাঁর বংশ পরিচয় সম্বন্ধে তেমন কিছু জানা যায় না। তিনি ছিলেন জাতিতে তুর্কী, বংশে খলজি এবং বৃত্তিতে ভাগ্যান্বেষী সৈনিক।
>১১৯৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি নিজ জন্মভূমির মায়া ত্যাগ করে জীবিকার অন্বেষণে গজনীতে আসেন। অল্পকাল পর তিনি বদাউন ত্যাগ করে অযোধ্যা যান। সেখানকার শাসনকর্তা হুসামউদ্দীনের অধীনে তিনি পর্যবেক্ষনের দায়িত্বে নিযুক্ত হন।> বখতিয়ারের সাহস ও বুদ্ধিমত্তায় সন্তুষ্ট হয়ে হুসামউদ্দীন তাকে বর্তমান মির্জাপুর জেলার দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ভাগবত ও ভিউলি নামক দুটি পরগনার জায়গীর দান করেন। এখানে বখতিয়ার তাঁর ভবিষ্যৎ উন্নতির উৎস খুঁজে পান। ভাগবত ও ভিউলি তার শক্তিকেন্দ্র হয়ে উঠে।
> তিনি দক্ষিণ বিহারে এক প্রাচীর ঘেরা দুর্গের মতো স'ানে আসেন এবং আক্রমণ করেন। প্রতিপক্ষ কোনো বাঁধাই দিল না। দূর্গ জয়ের পর তিনি দেখলেন যে দূর্গের অধিবাসীরা সকলেই মুন্ডিত মস্তক এবং দূর্গটি বইপত্রে ভরা। জিজ্ঞাসা করে তিনি জানতে পারলেন যে, তিনি এক বৌদ্ধ বিহার জয় করেছেন। এটি ছিল ওদন্দ বিহার বা ওদন্তপুরী বিহার। এ সময় হতেই মুসলমানেরা এ স'ানের নাম দিল বিহার। আজ পর্যন্ত তা বিহার নামে পরিচিত
।
> বখতিয়ার খলজির নদিয়া জয়ের সঠিক তারিখ সম্বন্ধে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ আছে। তবে বর্তমানে ১২০৪ খ্রিস্টাব্দই নদিয়া জয়ের তারিখ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
> তিনি লক্ষণাবতী অধিকার করে সেখানেই রাজধানী স্থাপন করেন। এ লক্ষণাবতীই মুসলমান আমলে লখনৌতি নামে পরিচিত হয়।
> গৌড় বা লখনৌতি বিজয়ের দুই বছর পর বখতিয়ার খলজি তিব্বত অভিযানে বের হন। এ তিব্বত অভিযানই ছিল তাঁর জীবনের শেষ সমর অভিযান।
>১২০৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হন। অনুমান করা হয় আলী মর্দান নামে একজন আমীর তাকে হত্যা করেছিল।