Studypress News

রাশিয়ার বৃহত্তম সামরিক মহড়া

11 Aug 2018

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর চীন ও মঙ্গোলিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে ইতিহাসের বৃহত্তম সামরিক মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া। চীন সীমান্ত এলাকায় শুরু হওয়া ‘ভস্তক-২০১৮’ বা ‘পূর্ব-২০১৮’ নামের যৌথ এ মহড়ায় রাশিয়ার তিন লাখ ও চীনের তিন হাজার দুইশ সেনাসদস্য অংশ নিয়েছে। তবে রাশিয়া ও চীনের প্রতিবেশী রাষ্ট্র মঙ্গোলিয়া এ মহড়ায় অংশ নিলেও তাদের ঠিক কত সেনাসদস্য অংশ নিয়েছে তা জানা যায়নি। খবর রয়টার্স।

রাশিয়া ও চীন এর আগে যৌথভাবে সামরিক মহড়ার আয়োজন করলেও তার আকার এত বড় ছিল না। একই সঙ্গে ১৯৮১ সালে শীতল যুদ্ধের সময় রাশিয়া এ ধরনের সামরিক মহড়ার আয়োজন করলেও তাতে এত সংখ্যক সেনাসদস্যের অংশগ্রহণ ছিল না। ১১ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া এ সামরিক মহড়া চলছে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

ভস্তক-২০১৮ নামের এ বিশাল সামরিক মহড়া এমন এক সময় শুরু হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্র এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করেছে এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার নানা ইস্যুতে একধরনের উত্তেজনা বিরাজ করছে। একই সঙ্গে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করেছে।

গত মঙ্গলবার মহড়া শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কিছু ভিডিও ও স্থির ছবি প্রকাশ করেছে। যেখানে সারি সারি ট্যাংক, সাঁজোয়া যানের চলাফেরা এবং যুদ্ধজাহাজ, বিমান ও হেলিকপ্টারের ওঠানামা দেখানো হয়েছে। এছাড়া আরেকটি ফুটেজে রাশিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে আলাস্কার বিপরীত উপকূলে আর্কটিক ব্রিগেডের অবতরণ দেখানো হয়েছে।

বেইজিংয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্কের পাশাপাশি এই মহড়ার মাধ্যমে মস্কো যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝাতে চাইছে, যুক্তরাষ্ট্র যেমন তাদের চিরশত্রু, তেমনি চীন তাদের অবশ্যম্ভাবী বন্ধু। মহড়ায় রাশিয়ার এক হাজারের বেশি সামরিক বিমান, দুটি নৌবহর, ৩৬ হাজার ট্যাংক, অসংখ্য সশস্ত্র যান এবং আকাশপথের সবগুলো ইউনিট অংশ নিয়েছে। এছাড়া মহড়ায় অংশ নিতে আসা চীনা বিমান বাহিনীর ২৪টি হেলিকপ্টার ও ৬টি জঙ্গিবিমানের রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে অবতরণের ভিডিও প্রকাশ করেছে মস্কো।

রাশিয়ার সাবেক কর্নেল এবং থিংক ট্যাংক কার্নেগি মস্কো সেন্টারের পরিচালক দিমিত্রি ট্রেনিন বলেন, ভস্তক-২০১৮ নামের এ মহড়ার মাধ্যমে রাশিয়া জানান দিতে চায়, যুক্তরাষ্ট্রকে তারা শত্রু ও চীনকে মিত্র বলে মনে করে। একই সঙ্গে এ মহড়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে চীনও জানান দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্রের চাপ তাদেরকে মস্কোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সামরিক সম্পর্কের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

এদিকে এ সামরিক মহড়ার প্রতিক্রিয়ায় ন্যাটো জানিয়েছে, তারা এ মহড়াকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তবে রাশিয়া ও চীনের মধ্যে সামরিক জোটের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস বলেন, আমি কখনো এ দুই দেশের জোট দীর্ঘ সময় ধরে টিকে থাকতে দেখিনি। আমি মনে করি, তারা নিজেদের স্বার্থেই কাজ করে। ফলে তাদের এ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও দীর্ঘমেয়াদি হবে না বলেই মনে হয়।