Studypress News
ডাক বিভাগের ডিজিটাল আর্থিক সেবা নগদ
06 Nov 2018
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মতোই টাকা পাঠানো, ব্যালান্স রিজার্চ, বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা যাবে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এ। এ লক্ষ্যে সারা দেশে এজেন্ট নিয়োগের কার্যক্রম শুরু করেছে ‘নগদ’। এই সেবায় একজন গ্রাহক দিনে সর্বোচ্চ ১০ বারে মোট আড়াই লাখ টাকা জমা এবং একই পরিমাণ টাকা তুলতে পারবেন। ক্যাশ ইন বা টাকা জমার জন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মতোই কোনো সেবা মাসুল নেই। তবে ক্যাশ আউট বা তোলার ক্ষেত্রে ইউএসএসডির ক্ষেত্রে ১৮ টাকা এবং অ্যাপের ক্ষেত্রে ১৭ টাকা সেবা মাসুল দিতে হবে। সেন্ড মানি বা টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে ইউএসএসডিতে চার টাকা সেবা মাসুল এবং অ্যাপে কোনো মাসুল দিতে হবে না।
বর্তমানে বিকাশ, রকেট বা অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় একজন গ্রাহক দিনে সর্বোচ্চ দুইবারে মোট ১৫ হাজার টাকা জমা দিতে পারেন এবং তুলতে পারেন সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা। সেদিক দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং সেবার তুলনায় ডাক বিভাগের ‘নগদ’-এ জমার ক্ষেত্রে ১৭ গুণ এবং তোলার ২৫ গুণ বেশি লেনদেনের সুযোগ পাওয়া যাবে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা মাসুল নগদের তুলনায় কিছুট বেশি।
জানা গেছে, গত আগস্টে ‘নগদ’ সেবা চালুর অনুমোদন চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করে ডাক বিভাগ। তবে এ ধরনের সেবা চালুর ক্ষেত্রে ডাক বিভাগকে অনুমোদন দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক কম্পানি আইনের আওতায় ব্যাংকগুলোকে এমএফএস পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব এমএফএসের নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু ডাক বিভাগ পরিচালিত হয় নিজস্ব আইনের (পোস্টাল অ্যাক্ট) আওতায়।
ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুশান্ত কুমার মণ্ডল কালের কণ্ঠকে বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে আমরা ‘নগদ’ নামের এই সেবাটি চালু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তাদের এখতিয়ারে না থাকায় তারা এই সেবাটিকে অনুমোদন দেয়নি। এখন আমরা নিজেরাই এই সেবা চালুর জন্য অগ্রসর হয়েছি। এই সেবার অধিকাংশ বিষয়ই এখনো প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে।” তবে তিনি বলেন, ‘ডাক বিভাগ অনেক আগে থেকেই ব্যাংকের মতো করে কিছু সেবা দিয়ে যাচ্ছে। সরকারি এই সেবার আওতায় টাকা পাঠানো যেটা এখন ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিসে রূপান্তরিত হয়েছে। তা ছাড়া পোস্টাল ক্যাশকার্ডও রয়েছে, যা ব্যাংকের কার্ডের মতোই একটি সেবা।’
তবে ‘নগদ’-এ ‘ব্যাংকলেড’ মডেলে পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং সেবার কয়েকগুণ বেশি অর্থ লেনদেনের সুযোগ থাকায় অসম প্রতিযোগিতার আশঙ্কায় করছে এমএফএসগুলো। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকটি এমএফএসের কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবার লেনদেনের সীমা অনেক কমিয়ে এনেছে। একটি মোবাইল সংযোগের বিপরীতে একটি এমএফএস-এ একটির বেশি অ্যাকাউন্ট খোলা যায় না। কিন্তু ডাক বিভাগের এই সেবায় একটি মোবাইল ফোন সংযোগের বিপরীতে পাঁচটি অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে, লেনদেন সীমাও বেশি।’
২০১০ সালে শুরু হওয়া বাংলাদেশ ডাক বিভাগের পােস্টাল ক্যাশ কার্ড সার্ভিস ছিল দেশের প্রথম ডিজিটাল আর্থিক সেবা।