Studypress News
জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল ছেড়েছে যুক্তরাষ্ট্র
20 Jun 2018
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক পরিষদ ইউএনএইচআরসি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ পরিষদের বিরুদ্ধে ‘নোংরা রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের’ অভিযোগে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি এ পরিষদের বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। এরপরে তিনি ওই ঘোষণা দেন। তিনি ইউএনএইচআরসি’কে ভন্ডামি ও আত্মনিবেদিত একটি পরিষদ বলে মন্তব্য করেন। বলেন, তারা মানবাধিকার নিয়ে উপহাস করছে।
তিনি গত বছর এ পরিষদকে চরম ইসরাইলবিরোধী বলে আখ্যায়িত করে কড়া সমালোচনা করেছিলেন। তখনই তিনি জানান দিয়েছিলেন এ পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের সদস্যপদ থাকা না থাকার বিষয় পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে আরো বলা হয়, জেনেভাভিত্তিক ইউএনএইচআরসি গঠিত হয় ২০০৬ সালে। যেসব দেশের মানবাধিকার ইস্যুতে গুরুত্বর রেকর্ড আছে তাদের সদস্যপদ দেয়ার কারণে এ পরিষদের সমালোচনা আছে। কিন্তু সমালোচনা যতই থাক, যুক্তরাষ্ট্র এখন যে অবস্থান নিয়েছে তাতে সারা বিশ্বে যেভাবে মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে সে ইস্যুগুলোতে নজরদারি করা ও চিহ্নিত করা খুব কঠিন হয়ে উঠতে পারে। নিকি হ্যালি তার ঘোষণায় বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও-এর সঙ্গে যৌথ এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএনএইচআরসি ছাড়ার ঘোষণা দেন নিকি হ্যালি। মাইক পম্পেও এ পরিষদদকে মানবাধিকারের এক দুর্বল রক্ষাকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ইউএনএইচআরসি ছেড়ে দেয়ার যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরাঁ। মুখপাত্রের মাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়েছেন তিনি। তাতে বলেছেন, ইউএনএইচআরসি-এ যুক্তরাষ্ট্র থাকুক এটা খুব বেশি প্রত্যাশিত। অন্যদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার জায়েদ রাদ আল হোসেন যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে ইসরাইল। যুক্তরাষ্ট্র এমন এক সময়ে ইউএনএইচআরসি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিল যখন অভিবাসন নীতির কারণে ট্রাম্প প্রশাসন ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো সীমান্তে পিতামাতার কাছ থেকে শিশু সন্তানদের আলাদা করে রাখা হচ্ছে। তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলাদা করে ওই সব শিশুকে রাখা হয়েছে জেলখানার মতো আটকা পরিবেশে। সেখানে আর্তনাদ করছে শিশুরা। তাদের পিতামাতার কাছে যাওয়ার জন্য কাঁদছে। এসব ভিডিও আকারে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মূলধারার পত্রিকাগুলোতে। নিউ ইয়র্ক থেকে বিবিসির সাংবাদিক নাদা তাওফিক বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন বহুবিধ বিষয়কে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার রক্ষা ও তা অনুমোদনের জন্য যারা যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে চায় বা দেখতে চান তাদের কাছে বিষয়টি বিদঘুটে মনে হতে পারে। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের সঙ্গে সব সময়ই সংঘাতময় সম্পর্ক বিদ্যমান যুক্তরাষ্ট্রের। ট্রাম্প প্রশাসন যেসব যুক্তি সামনে এনেছে ঠিক একই রকম আরো অনেক কারণ সামনে এনে ২০০৬ সালেই এই পরিষদ বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রশাসন। ওই সময় জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ছিলেন জন বল্টন। তিনি বর্তমানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও জাতিসংঘের তীব্র সমালোচক।