Studypress News
এডিবির পূর্বাভাস চলতি অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ
11 Apr 2018
চলতি অর্থবছর শেষে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
১১ এপ্রিল, বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এডিবির কার্যালয়ে ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০১৮’ প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির আবাসিক পরিচালক মনমোহন প্রকাশ এ পূর্বাভাস দেন। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন এডিবির অর্থনীতিবিদ সুন চান হং। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতির বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হয়।
সংস্থাটি বলছে, অভ্যন্তরীণ ভোগ ব্যয় ও সরকারি বিনিয়োগের ওপর ভিত্তি করেই প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ হবে। তবে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে রফতানি আয় আরও শক্তিশালী করতে হবে। অর্থনৈতিক অগ্রতির ক্ষেত্রে সঠিক পথেই এগুচ্ছে বাংলাদেশ। পরপর তিন বছর ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এরই প্রমাণ।
প্রকাশ বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পুঁজি বাজারে প্রবেশ করতে পারবে এবং দেশে অধিক প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ আসবে। তবে সেই সাথে শুল্কমুক্ত রফতানির সুযোগের মতো সুবিধাদি আর পাবে না।’
এডিবির আবাসিক পরিচালক স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, ২০২১ সালে জাতিসংঘ উন্নয়ন নীতিবিষয়ক কমিটির ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় বাংলাদেশ সব পূর্বশর্ত পূরণ করতে সক্ষম হবে। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এই উত্তরণের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা সম্পর্কে সচেতন থেকে দ্রুত এই উত্তরণ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করায় তিনি এর প্রশংসা করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির কারণে রফতানি আয় প্রবৃদ্ধিতে যুক্ত হতে পারছে না। এডিবির মতে প্রবৃদ্ধির গতিশীলতা ধরে রাখতে রফতানিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে। শুধু পোশাক শিল্প ও রেমিটেন্সের ওপর নির্ভরশীল হলে চলবে না। রফতানিতে চামড়া, চামড়াজাত পণ্য, হাল্কা প্রকৌশল শিল্প, ইলেক্ট্রনিক্স, ওষুধ, পাটজাত পণ্য, সফটওয়্যার, আইটি খাতকেও গুরুত্ব দিতে হবে। বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, যা মানবসম্পদ উন্নয়ন, মাথাপিছু আয় ও প্রবৃদ্ধিতে ভালো করেছে। গত তিন বছরে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ওপরে—এটা কম অর্জন নয়। ২০১৬ সালে ৭ দশমিক ১, ২০১৭ সালে ৭ দশমিক ৩ এবং ২০১৮ সালের শেষে ৭ শতাংশ অর্জন অনেক ভালো। ২০১৯ এই প্রবৃদ্ধি ৭.২% হবে মনে করছে এই প্রতিষ্ঠান। এই সময়ে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে ৬.১% হবে বলেও ধারণা করছে এডিবি। ২০১৯ সালের অর্থবছরে এই হার আরো বেড়ে ৬.৩% হবে এরূপ পূর্বাভাস দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এডিবি মনে করে, বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথে আছে। এটা ধরে রাখা কম কথা নয়। বিশ্বের কম দেশেই আছে বাংলাদেশের মতো ঊর্ধ্বগতির প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। প্রবৃদ্ধি মূলত কৃষি, সেবা ও শিল্প খাতের ওপর নির্ভর করে। এর মধ্যে কৃষি ও সেবা খাতে বাংলাদেশ ভালো করছে। শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হলে অর্থনীতির বহুমুখীকরণ করতে হবে এবং প্রযুক্তিগত শিক্ষা ও ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বাড়তে গুণগত প্রশিক্ষণ দরকার বলে উল্লেখ করে এডিবি।