Studypress News

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গণহত্যা

28 Mar 2017

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের মানুষের ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছিল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও গণহত্যার ইতিহাস আছে। সেই চিত্রই তুলে ধরা হলো:

# আর্মেনীয় গণহত্যা

আর্মেনিয়া ইউরোপের একটি দেশ। জাতিগত আর্মেনীয়রা নিজেদের ‘হায়’ বলে থাকে। আর্মেনিয়ার ৯০ শতাংশ মানুষ এই ‘হায়’ জাতির। ১৯১১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯২২ সালে এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তুর্কিরা আর্মেনীয়দের ওপর নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। তিন বছর ধরে চলা এই গণহত্যায় সে দেশের ১৫ লাখ মানুষ মারা যায়। সে সময় আর্মেনিয়ার জনসংখ্যা ছিল মাত্র ৩৪ লাখ।

# হলোকাস্ট ও ন্যানকিং গণহত্যা
হলোকাস্ট শব্দটা বাংলা করলে দাঁড়ায় সবকিছু পোড়ানো। তবে শব্দটি এখন জার্মান সেনাদের প্রায় ৬০ লাখ মানুষ হত্যাকেই বোঝায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের ওপর চালানো এই গণহত্যাকে স্মরণকালের সবচেয়ে নৃশংস গণহত্যা হিসেবে ধরা হয়।
১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে থেকেই ইহুদিদের ওপর জার্মান বাহিনীর খড়্গ নেমে এসেছিল। তবে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যা ঘটে, সেই নৃশংসতাকে কোনো শব্দ দিয়ে বোঝানো সম্ভব নয়। জার্মান বাহিনী ১৯৪১ সাল নাগাদ ইউরোপের বেশ কিছু দেশ দখলে নেয়। তখন জার্মানিতে ক্রমবর্ধমান নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে পার্শ্ববর্তী পোল্যান্ড, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ডেনমার্ক ও নরওয়েতে আশ্রয় নেয় লাখ লাখ মানুষ। অনেক ইহুদিকে বন্দী করে পাঠানো হয় পোল্যান্ড ও জার্মানির বন্দিশালাগুলোতে।
এসব বন্দিশালাতেই কখনো গুলি, কখনো গ্যাস কিংবা কখনো রাসায়নিক প্রয়োগে হত্যা করা হয় কয়েক লাখ ইহুদিকে। বন্দিশালায় অত্যধিক পরিশ্রম, খাবারের অভাব আর চিকিৎসার অভাবেও মারা যায় বহু ইহুদি।
এই নৃশংসতম গণহত্যায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে প্রতিবছর ২৭ জানুয়ারি জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক হলোকাস্ট দিবস।
একই সময়ে আরেকটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যা ‘দ্য ন্যানকিং ম্যাসাকার’ কিংবা ‘রেইপ অব ন্যানকিং’ নামে অনেকের জানা। ১৯৩৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৯৩৮ সালের জানুয়ারির শেষ ভাগ পর্যন্ত জাপানি সেনাবাহিনী চীনের তৎকালীন রাজধানী ন্যানকিং শহরটিকে একদম গুঁড়িয়ে দেয়। প্রচুর পরিমাণে ধর্ষণ, হত্যাকাণ্ড ও লুটতারাজ চলতে থাকে। এই অল্প সময়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ লাখ। বলা হয়ে থাকে, সেই যুদ্ধে এক তলোয়ারে ১০০ মানুষকে জবাই করা হতো।

# কম্বোডীয় গণহত্যা
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়া। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত দেশটিতে ক্ষমতায় ছিল খেমাররুজরা। এই চার বছরে খেমাররুজ সরকার নির্মম গণহত্যা ঘটিয়েছিল, যা কম্বোডীয় গণহত্যা নামেই পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিভিন্ন গণহত্যার মধ্যে কম্বোডিয়ার এই হত্যাকাণ্ড উল্লেখযোগ্য। বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার নামে এই সময়ে প্রায় ২০ লাখ সাধারণ কম্বোডীয়কে হত্যা করে ক্ষমতাসীন বামপন্থী খেমাররুজ সরকার।
যে নৃশংস হত্যার শুরু হয়েছিল আগের সরকারের অধীনে কাজ করা কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়ে। কেউ অনিয়মের প্রতিবাদ করলেই হত্যা করা হতো। একপর্যায়ে এই হত্যাযজ্ঞ ছড়িয়ে পড়ে খোদ খেমাররুজ সদস্যদের মধ্যেও। বিদেশিদের গুপ্তচর, দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বায়বীয় অভিযোগে অনেক খেমাররুজ সদস্যকেও তাঁদের জীবন হারাতে হয়।
একসময় দেশটিতে চরম অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়। দেখা দেয় দুর্ভিক্ষ। দুর্ভিক্ষ আর মহামারিতে আক্রান্ত হয়েও প্রাণ হারাতে থাকে হাজার হাজার মানুষ। পরে ভিয়েতনামের সরকারি বাহিনীর হাতে খেমাররুজ সরকারের পতন হয়।
# বসনীয় গণহত্যা
১৯৯২ সালের এপ্রিলে যুগোস্লাভিয়া থেকে নিজেদের স্বাধীন ঘোষণা করে বসনিয়া-হার্জেগোভিনা। এই অপরাধে এই মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায় বসনীয় সার্বরা। ধারণা করা হয়, এই গণহত্যায় কমপক্ষে এক লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
তিন বছর ধরে চলা এই গণহত্যার মধ্যে নৃশংসতায় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সেব্রেনিৎসা গণহত্যা। ১৯৯৫ সালের জুলাই মাসে জাতিসংঘ ঘোষিত নিরাপদ এলাকা সেব্রেনিৎসায় নিয়োজিত শান্তিরক্ষী বাহিনীর সামনেই আলাদা করা হয় সেখানে বসবাসরত নারী ও পুরুষদের। এরপর শুরু হয় নৃশংসতার প্রথম পর্ব। মুসলিম নারী ও কিশোরীদের একে একে বাসে তুলে পাঠানো হয় সার্ব-অধ্যুষিত এলাকাগুলোয়, যেখানে তাদের ওপর চালানো হয় যৌন নিপীড়ন, অপেক্ষাকৃত কম বয়সীরা শিকার হয় ধর্ষণের। অন্যদিকে সেব্রেনিৎসার সাত থেকে আট হাজার কিশোর ও পুরুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় সেখানেই।
একই ধরনের নৃশংসতা চালানো হয় সারায়েভো, জেপা, ফোকা, প্রিজেদর ও ভিজগ্রাদে। সার্বীয় সৈন্যদের হাতে হত্যা আর ধর্ষণের শিকার হয় লক্ষাধিক বসনীয় মুসলিম।

# রুয়ান্ডায় গণহত্যা
রুয়ান্ডার জনগণের মধ্যে মূল দুই গোষ্ঠী হচ্ছে হুতু ও তুতসি, যার মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় হুতু। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডা দখলে নেয় বেলজিয়াম। তারা রুয়ান্ডার ক্ষমতায় বসায় তুতসিদের। দেশটার ব্যবসা-বাণিজ্য এই তুতসিরা নিয়ন্ত্রণ করত। ১৯৬২ সালে রুয়ান্ডা ছেড়ে চলে যায় বেলজিয়াম। এরপর তুতসিদের হাত থেকে ক্ষমতা চলে যায় সংখ্যাগুরু হুতু সম্প্রদায়ের কাছে। এবার হুতুরা তুতসিদের ওপর নির্যাতন চালাতে থাকে। এ অবস্থা দিনে দিনে বাড়তে থাকে। ১৯৯৪ সালের ১৭ এপ্রিল এই দ্বন্দ্ব গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়।
উগ্র জাতীয়তাবাদে মত্ত হয়ে প্রতিবেশী হুতুরা সপরিবার হত্যা করতে শুরু করে প্রতিবেশী তুতসিদের। এমনকি হুতু সম্প্রদায়ভুক্ত স্বামী তাঁর তুতসি স্ত্রীকে হত্যা করেন এই ভয়ে যে তাঁর স্ত্রী তুতসি হওয়ার অপরাধে তাঁরও প্রাণ যেতে পারে। লক্ষাধিক তুতসি নারীকে ধরে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহারের জন্য।
১৯৯৪ সালের জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত, মাত্র ১০০ দিন চলা হত্যাকাণ্ডে তুতসি সম্প্রদায়ের আট লক্ষাধিক নারী-পুরুষ মারা যায় হুতু সম্প্রদায়ের হাতে।

# দারফুর গণহত্যা
একুশ শতকের নৃশংসতম গণহত্যা হিসেবেই ধরা হয় দারফুর গণহত্যাকে। এই গণহত্যা শুরু হয় ২০০৪ সালে, যখন সুদানের কিছু সংগঠন সুদান সরকারের বিরুদ্ধে অনারব সুদানিদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ এনে বিদ্রোহ ঘোষণা করে।
সুদানের একনায়ক ওমর আল বশির সরকার এ ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিক মোড় নেয়। ওমর আল বশিরের নেতৃত্বাধীন সুদান সরকারের সহায়তায় গঠিত আধা সামরিক জানজায়িদ বাহিনী অনারব এই বিদ্রোহীদের দমনের নামে অনারব জনগোষ্ঠীর ওপর শুরু করে নৃশংস এক গণহত্যা। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুসারে এখন পর্যন্ত সুদানে গণহত্যার শিকার হয়ে মারা গেছে দুই লক্ষাধিক মানুষ, ধর্ষণের শিকার হয়েছে অগুনতি নারী আর বাস্তুহারা হয়েছে বিশ লক্ষাধিক মানুষ।

সূত্র (প্রথম আলো)

 

বিসিএস প্রিলি কোর্স+ব্যাংক ক্রাশ প্রোগ্রাম+৬ মাসের মেম্বারশিপ=৫০০ টাকা

অফারটি সীমিত সময়ের জন্য

বিসিএস প্রিলি কোর্স: ১২০ দিনের কোর্স+১২০টি মডেল টেস্ট+অধ্যায়ভিত্তিক আলোচনা+কুইজ+কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স+এডিটরিয়ালের অনুবাদ

ব্যাংক ক্রাশ প্রোগ্রাম: ৪০ দিনের কোর্স+৪০টি মডেল টেস্ট+ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার প্রায় ১৫০টি প্রশ্ন ও সমাধান+ফোকাস রাইটিং

****কোর্সটি সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক।

StudyPress-এ রেজিস্ট্রেশন করবেন যেভাবে--

-- প্রথমে, www.studypress.org -এই অ্যাড্রেসে যান।

-- তারপর, (Sign up Now)-এ Click করুন।

-- এবার, আপনার (email ID), (Mobile number) এবং নিজের পছন্দের (password) লিখুন।

- এবার, (সাইন আপ) -এ ক্লিক করুন।

∎আমাদের যোগাযোগ করতে পারবেন ৩ (তিন) ভাবে-

১। সরাসরি কথা বলুন-(01917-777021)

২। StudyPress ফেসবুক পেইজে ইনবক্স করুন অথবা,

৩। ওয়েবসাইটের অন-লাইন চ্যাট অপশনটি ব্যবহার করুন।

∎আমাদের বিশেষজ্ঞ শিক্ষক আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুত 24/7

# কোর্সের ফি দিতে পারবেন আমাদের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইন পেমেন্টে র মাধ্যমে অথবা বিকাশের মাধ্যমে। 01917-777021 আমাদের বিকাশ নাম্বার