Studypress News

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কৃষি নির্ভর অর্থনীতি বনাম শিল্প ও সেবা খাতনির্ভর অর্থনীতি

04 Feb 2017

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কৃষি নির্ভর অর্থনীতি বনাম শিল্প ও সেবা খাতনির্ভর অর্থনীতি

(বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সিনিয়র অফিসার ২০১৭)

‘কৃষিপ্রধান বাংলাদেশ’ প্রবাদবাক্যের মতো এ কথাটি এখন আর আজ এতটা উচ্চারিত হয় না৷ বাংলাদেশ বর্তমানে মূলত কৃষি নির্ভর নয়৷ কৃষিতে উৎপাদন বেড়েছে, বেড়েছে প্রযুক্তির ব্যবহার৷ তারপরও বাংলাদেশ এখন রয়েছে শিল্পের উড্ডয়ন পর্যায়ে৷সোনালি আঁশের সেই দিন আর নেই৷ বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান খাতে পরিণত হয়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানি৷ অর্থাৎ শিল্প খাত, এবং তার সঙ্গে সেবা খাত এগিয়ে গেছে অনেক৷

বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল শক্তি কৃষি। কৃষি খাতের অবদান সমাজ ও অর্থনীতিতে কতটা ব্যাপক-এর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নতুন করে বলা নিষ্প্রয়োজন। ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখ বাংলাদেশের একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে প্রকাশ, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) কৃষি খাতের অবদান এখনো কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ব্যাপক। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানা গেছে দারিদ্র্য কমাতে অকৃষি খাতের চেয়ে কৃষি খাতের ভূমিকা তিন গুণ বেশি। ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের ‘ট্র্যাটেজিক এগ্রিকালচার সেক্টর অ্যান্ড ফুড সিকিউরিটি ডায়াগনস্টিক ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গত কয়েক দশকের দেশের কৃষি খাতের গতি-প্রকৃতি নিয়ে এ গবেষণা করা হয়েছে।

কৃষিনির্ভর অর্থনীতির এই দেশে কৃষির ওপর আরো জোর দেয়ার তাগিদ এসেছে এই প্রতিবেদনের মধ্য দিয়ে। কৃষির বহুমুখীকরণের পাশাপাশি কৃষি জাত শিল্প-কারখানা এবং উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চয়তা ক্রমে বাজার ক্ষেত্র বিস্তৃতকরণ ও সমভাবে গুরুত্বপূর্ণের বিষয়টিও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না বিধায় কৃষিক্ষেত্র থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন এমন অভিযোগ রয়েছে। এর নিরসন ঘটাতে হবে। দেশ-জাতির বৃহৎ স্বার্থে কৃষককে কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখার প্রয়াস ব্যাপক জোরদার করার পাশাপাশি কৃষির পথ রাখতে হবে মসৃণ। ওই গবেষণা প্রতিবেদনে উপস্থাপিত হয়েছে যে, ১৯৯৯ থেকে ২০১৪ সময়কালে দারিদ্র্যের হার ৪৮ শতাংশ থেকে কমে ২৮ শতাংশে নেমেছে। এ সময় কৃষি ও অকৃষি উভয় ক্ষেত্রেই কর্মী পিছু জিডিপি বেড়েছে। গবেষণায় বহুমাত্রিক রিগ্রেশন মডেল ব্যবহার করে দেখা গেছে, কর্মী পিছু কৃষি জিডিপি এক শতাংশ বাড়লে দারিদ্র্যের প্রকোপ কমে দশমিক ৩৯ শতাংশ আর অকৃষি খাতে এক শতাংম বাড়লে দারিদ্রের প্রকোপ কমে দশমিক ১১ শতাংশ।

কৃষিতে যেহেতু কর্মসংস্থান বেশি সেহেতু সঙ্গতই কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধিতে দারিদ্র্য বেশি হারে কমেছে। তবে এও সত্য যে, অকৃষিজাত কর্মকাণ্ডের চাহিদা বৃদ্ধি ও সেসব কর্মকাণ্ডের সম্প্রসারণের ফলেই কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি হয়ে থাকে। তাই উভয় বিষয় আমলে রেখেই যথাযথ কর্মপরিকল্পনা নিরূপণ করে এগোতে হবে। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। আগামীর চাহিদা পূরণে এর বিকল্প নেই। শুধু ধান চাষে আটকে থাকলে হবে না। রবিশস্যসহ কৃষিজাত অন্যান্য পণ্য উৎপাদনে মনোযোগী হতে হবে এবং কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে হবে। তাহলে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র যেমন আরো বিস্তৃত হবে তেমনি রপ্তানি তালিকাও হবে দীর্ঘ। কৃষি উৎপাদনের অন্তরায়সমূহ চিহ্নিত করে নিতে হবে যথাযথ পদক্ষেপ। রক্ষা করতে হবে কৃষি জমি। মাটির ব্যবহার বহুমুখীকরণের বিষয়টির ব্যাপারেও দূরদর্শী ভাবনা জরুরি। জলবায়ু পরিবর্তনের নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন কর্মপরিকল্পনা দরকার।

কৃষি ও কৃষক এই দুই দিকেই বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে সার্বিক স্বার্থ ও প্রয়োজনেই। কৃষি উৎপাদনের সব পথ যেমন মসৃণ করতে হবে তেমনি উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়ার পথও করতে হবে প্রতিবন্ধকতামুক্ত। বিদ্যমান বাস্তবতায় পুরো খাতটিরই সংস্কার প্রয়োজন। কৃষি খাতে সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারিত্ব বাস্তবায়িত হলে এর আমূল পরিবর্তন সম্ভব। কৃষির আরো বিকাশ ঘটলে এবং কৃষিভিত্তিক শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে পারলে কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। শিক্ষিত কর্মহীনরা যদি এ খাতে সম্পৃক্ত হন তাহলে উৎপাদন ব্যবস্থায়ও নতুনত্ব আনা সম্ভব।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৭৫ ভাগ মানুষ এখনো গ্রামে বসবাস করে৷ গ্রামে যাঁরা বসবাস করেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় ৬০ ভাগ লোকের এখনো কৃষি খামার বা চাষাবাদ রয়েছে৷ অন্যদিকে শহরেও শতকার প্রায় ১১ ভাগ মানুষ সরাসরি কৃষির সঙ্গে যুক্ত৷ মোট দেশজ উত্‍পাদনের হিসাবে জিডিপিতে এখন কৃষিখাতের অবদান শতকরা ১৫.৩৩ ভাগ৷ এছাড়া এই কৃষিখাতে কর্মসংস্থান হচ্ছে ৪৮.১ ভাগ কর্মজীবী মানুষের৷

বাংলাদেশে এখন কৃষিপণ্য ধান, গম, ভুট্টা, চা, পাট, তুলা, আখ, আলু, ডাল, তৈলবীজ, সবজি, ফল, মশলা, ফুল ও রেশমগুটি৷ এর বাইরে মাছ চাষ, সবজি চাষ, গাবাদি পশু ও হাস-মুরগি পালন অন্যতম৷ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির আনুপাতিক অবদান কমলেও মোট কৃষি উত্‍পাদন বাড়ছে৷ কৃষিতে উন্নত প্রযুক্তি, বীজ, সার এবং যন্ত্রের ব্যবহার উত্‍পাদন বাড়ার পেছনে প্রধান কারণ৷ এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ এবং পরিবেশ সহিষ্ণু ভিভিন্ন ফসল৷ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তিনটি বৃহত্‍ খাতের মধ্যে কৃষির অবদান এখন তৃতীয়৷স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ১৯৭২-৭৩ সালে রপ্তানি আয় ছিল মাত্র ৩৪৮.৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ যার ৯০ ভাগ তখন আসে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে৷ আশির দশকে এই ধারার পরিবর্তন শুরু হয়ে, যা এখন আরো দ্রুত হচ্ছে৷ কৃষির জায়গা দখল করে নিচ্ছে শিল্প এবং সেবা খাত৷ বর্তমানে বাংলাদেশের বার্ষিক রপ্তানি আয় মিলিয়ন নয়, ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷

জাতীয় অর্থনীতিতে কৃষির অবদান দিন দিন কমে আসছে। কৃষি পণ্যের যথাযথ বাজার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারা এবং উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না হওয়াই এর অন্যতম কারণ। একই সঙ্গে কৃষিখাতের প্রবৃদ্ধিও কমছে।ঢাকা চেম্বারের এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৩৮০ বিলিয়ন টাকা। সেখানে কৃষি খাতের অবদান ১৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ বা ১ হাজার ৪৮৭ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন টাকা। ২০১১-১২ অর্থবছরে জিডিপিতে এ খাতের অবদান ছিল ১৫ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। ২০১০-১১ অর্থবছরে এ অবদান ছিল ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং ২০০৯-১০ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ১৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। পাশাপাশি বিগত বছরগুলোতে কৃষিখাতের প্রবৃদ্ধিও কমেছে হতাশাজনকভাবে। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ওই গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০০৯-১০ ও ১১-১২ অর্থবছরে কৃষিখাতের প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং ৫ দশমিক ০৯ শতাংশ। আর ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে তা নেমে আসে যথাক্রমে ১ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং ১ দশমিক ১৮ শতাংশে।

এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের বিগত ৫ বছরে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও শিল্প খাতে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান ছিল ১৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। সেখান থেকে ধারাবাহিকভাবেই জিডিপিতে বাড়তে থাকে শিল্পখাতের অবদান। ২০১২-১৩ অর্থবছরে জিডিপিতে এর অবদান দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত ১০ বছরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময় ২০০৫-০৬ অর্থবছরে শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ৭৭ শতাংশ। পরে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এ প্রবৃদ্ধি কমতে শুরু করে। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে এটা দাঁড়ায় ৭ দশমিক ২১ শতাংশে ও ২০০৮-০৯ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছিল ৬ দশমিক ৬৮ এবং তার পরবর্তী অর্থবছরে তা ছিল ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ।

রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ও নদী ভাঙ্গনের কারণে প্রতিবছরই আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তা ছাড়া বিভিন্ন সময় কৃষি পণ্যে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না হওয়ায় কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। তাই জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান কমে আসছে। এর ফলে এ বছর খাদ্যপণ্য আমদানিতে এলসি খোলা ও নিষ্পত্তির প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের সরকারগুলো অর্থনৈতিক বিষয়ের চেয়ে রাজনৈতিক বিষয়গুলোর প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ।

বাংলাদেশ ধীরগতিতে কৃষি প্রধান অর্থনীতি থেকে একটি শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির দেশে পরিণত হচ্ছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ছিল প্রায় ২১ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে ২০১২-১৩ অর্থবছর সময়কালে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেয়েছে। ফলে ২০১২-১৩ অর্থবছরে এসে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান দাঁড়িয়েছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ, যার কারণে অর্থনীতিতে তিনটি বৃহৎ খাতের মধ্যে কৃষির অবদান এখন তৃতীয়। জিডিপিতে সেবা খাতের অবদান কয়েক বছর ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। অপরপক্ষে শিল্প খাত এ সময়কালে ক্রমবর্ধনশীল অবদান রেখেছে এবং প্রবৃদ্ধি ছিল ভাল। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান ছিল ২৯ শতাংশ। সেখান থেকে তিন শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০১২-১৩ অর্থবছর পর্যন্ত জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান ৩২ শতাংশ, যেটি বর্তমানে আরও বেড়েছে।

চলমান ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণ করতে অবশ্যই শিল্পের দিকে ঝুঁকতে হয়েছে। তার মানে এই নয় যে, কৃষিকে অবহেলা করা হয়েছে। কৃষি তার অবস্থানেই ছিল। কিন্তু শিল্প এগিয়ে গেছে দ্রুত, যা কৃষির পক্ষে সম্ভব নয়। তবে কৃষির বহুমুখীকরণের ওপর জোর দেয়া হয়েছিল চলমান ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়, যাতে প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

জিইডির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত চার বছরে কৃষি খাতে গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হলো তিন দশমিক নয় শতাংশ। কিন্তু ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি হয় মাত্র দুই দশমিক দুই শতাংশ। অন্যদিকে ২০১২-১৩ অর্থবছরে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল অনেক উৎসাহ ব্যঞ্জক। এ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছিল আট দশমিক নয় শতাংশ, যা গত চার বছরের গড় প্রবৃদ্ধি আট দশমিক এক শতাংশ থেকেও বেশি। কিন্তু সেবা খাতে দীর্ঘ সময় ধরে প্রায় স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি ছিল ছয় শতাংশ, যা ২০১২-১৩ অর্থবছরে কিছুটা কমে হয়েছে পাঁচ দশমিক সাত শতাংশ। তারপরও সেটি ছিল কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধির চেয়েও বেশি।

বর্তমান সময়ে দেশের অর্থনীতি অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে সমৃদ্ধ, বিস্তৃত, স্থিতিশীল ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে মুক্ত। অর্থনীতি ধারাবাহিকভাবে অগ্রসরমান, যা অতীতের যে কোনো বৃদ্ধির প্রবণতা থেকে অনেক বেশি গতিময়। বাংলাদেশ ধীরগতিতে দৃঢ় ও স্থিতিশীল কৃষি প্রধান অর্থনীতি থেকে একটি শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির দেশে পরিণত হচ্ছে, যা মধ্য আয়ের অর্থনীতির দেশে রূপান্তরিত হওয়ার অন্যতম পথ।

ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষি থেকে শিল্পের দিকে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের কৌশলের ক্ষেত্রে পরিকল্পনায় বলা হয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি এর উৎপাদন কাঠামোয় খুব কমই পরিবর্তন অবলোকন করেছে এবং ধারাবাহিকভাবে কৃষির মতো কম উৎপাদনশীল এবং অনানুষ্ঠানিক সেবা খাতের ওপর নির্ভরতা এখানও রয়েছে। ফলে তা উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাধা তৈরি করেছে। এ পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে হলে পরিকল্পনা শেষে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে বিনিয়োগের হার জিডিপির বর্তমানে ২৫ শতাংশ থেকে ৩২ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। এই বিনিয়োগ মূলত অবকাঠামোগত প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ ( বিদ্যুত ও যোগাযোগ) এবং মানব সম্পদ উন্নয়নে নিয়োজিত করতে হবে। ফলে শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে। অর্থনীতির সব খাতে উচ্চ উৎপাদনশীলতা যাতে অবদান রাখতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে জোর দেয়া হবে। শ্রমঘন, রফতানিমুখী শিল্প খাত এবং সংগঠিত সেবা খাতের দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্থনীতিতে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এসবের পাশাপাশি গ্রামীণ অকৃষি এবং শহুরে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পে কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেয়া হবে।

সবশেষে বলা যায়, বাংলাদেশ আর কৃষি নির্ভর নয়। জিডিপি তে কৃষির অবদান ধীরে ধীরে কমলেও উৎপাদন বাড়ছে। বাংলাদেশ বর্তমানে  শিল্পখাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে শিল্প খাত ও সেবা খাত এগিয়ে যাচ্ছে আর সূচিত হচ্ছে বাংলাদেশের সমৃদ্ধির পথ।

 

বিসিএস প্রিলি কোর্স+ব্যাংক ক্রাশ প্রোগ্রাম+৬ মাসের মেম্বারশিপ=৫০০ টাকা

অফারটি সীমিত সময়ের জন্য

বিসিএস প্রিলি কোর্স: ১২০ দিনের কোর্স+১২০টি মডেল টেস্ট+অধ্যায়ভিত্তিক আলোচনা+কুইজ+কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স+এডিটরিয়ালের অনুবাদ

ব্যাংক ক্রাশ প্রোগ্রাম: ৪০ দিনের কোর্স+৪০টি মডেল টেস্ট+ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার প্রায় ১৫০টি প্রশ্ন ও সমাধান+ফোকাস রাইটিং

****কোর্সটি সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক।

StudyPress-এ রেজিস্ট্রেশন করবেন যেভাবে--

-- প্রথমে, www.studypress.org -এই অ্যাড্রেসে যান।

-- তারপর, (Sign up Now)-এ Click করুন।

-- এবার, আপনার (email ID), (Mobile number) এবং নিজের পছন্দের (password) লিখুন।

- এবার, (সাইন আপ) -এ ক্লিক করুন।

∎আমাদের যোগাযোগ করতে পারবেন ৩ (তিন) ভাবে-

১। সরাসরি কথা বলুন-(01917-777021)

২। StudyPress ফেসবুক পেইজে ইনবক্স করুন অথবা,

৩। ওয়েবসাইটের অন-লাইন চ্যাট অপশনটি ব্যবহার করুন।

∎আমাদের বিশেষজ্ঞ শিক্ষক আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুত 24/7

# কোর্সের ফি দিতে পারবেন আমাদের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইন পেমেন্টে র মাধ্যমে অথবা বিকাশের মাধ্যমে। 01917-777021 আমাদের বিকাশ নাম্বার