Studypress News

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যেভাবে হয়

08 Nov 2016

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের দ্বাদশ সংশোধনী অনুযায়ী প্রতি চার বছর পরপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথা অনুযায়ী নভেম্বর মাসের প্রথম সোমবারের পরবর্তী মঙ্গলবার এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনে অংশ নিতে প্রার্থীকে অবশ্যই তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়।

প্রথম শর্ত: প্রার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে।

দ্বিতীয় শর্ত: তাঁকে অন্তত ৩৫ বছর বয়সী হতে হবে।

তৃতীয় শর্ত: প্রার্থীকে তাঁর জীবদ্দশায় অন্তত ১৪ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বাস করতে হবে।

প্রার্থী নির্বাচন:

প্রথম ধাপ:

দীর্ঘ এক মাসব্যাপী ভোটের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যে প্রার্থী নির্বাচিত হন। আইওয়া রাজ্যে এ জন্য রাজনৈতিক নেতাদের সমিতিতে নির্বাচন সম্পর্কিত আলোচনা হয়। দলের প্রার্থী হিসেবে  নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হয় সর্বোচ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতা  নিয়ে।

দ্বিতীয় ধাপ:

পরবর্তী ধাপে মূল নির্বাচনে ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়া (ওয়াশিংটন নগরী) কোনো অঙ্গরাজ্যের অংশ নয়।

ভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ও একজনকে ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেন ভোটাররা। একজন ভোটার নিজের পছন্দের প্রেসিডেন্টের জন্য ভোট দেওয়ার সময় একই সঙ্গে ইলেক্টোরাল প্রতিনিধির জন্যও ভোট দেন।

মূলত ভোটাররা ইলেক্টর নির্বাচনের জন্য ভোট দেন। কারণ কাগজে-কলমে এ ইলেক্টরদের ভোটেই নির্বাচিত হন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট।

প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের পপুলার ভোটের মাধ্যমেই ইলেক্টোরাল কলেজের সদস্যদের নির্ধারণ করা হয়। মনোনীত একজন প্রার্থীকে সমর্থনের অঙ্গীকার করেন তাঁরা।

ইলেক্টোরাল কলেজ কী

ইলেক্টোরাল কলেজের ৫৩৮ সদস্য রয়েছে। জনসংখ্যার ভিত্তিতে কোন রাজ্য থেকে কতজন সদস্য হবেন, তা নির্ধারিত হয়।

৫৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজের মধ্যে যিনি ন্যূনতম ২৭০টি পাবেন, তিনিই বেসরকারিভাবে নির্বাচিত বলে ঘোষিত হবেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে তাঁর রানিং মেট আপনাআপনিই নির্বাচিত হয়েছেন বলে বিবেচিত হবে।

সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ায় ৫৫ জন ইলেক্টর রয়েছেন। অন্য রাজ্যগুলোর মধ্যে টেক্সাসে ৩৮ জন ইলেক্টর এবং নিউইয়র্ক ও ফ্লোরিডায় ২৯ জন করে ইলেক্টর রয়েছেন।

অন্যদিকে কম জনসংখ্যা অধ্যুষিত আলাস্কা, ডিলাওয়্যার, ভারমন্ট ও ওইয়োমিংয়ে মাত্র তিনজন করে ইলেক্টর রয়েছেন। ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ায় তিনজন ইলেক্টর রয়েছেন।

ইলেক্টোরাল কলেজের সদস্যরাই ১৯ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন।

সফল প্রার্থীকে ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে অবশ্যই ২৭০টি ভোট পেতে হয়।

‘সুইং স্টেট’ বা ‘দোদুল্যমান রাজ্যের’ ভূমিকা

কোনো কোনো রাজ্য ঐতিহাসিকভাবে প্রতি নির্বাচনেই ডেমোক্রেট দল বা রিপাবলিকান প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে আসছে। তবে এমন বেশ কয়েকটি রাজ্য রয়েছে যেখানে ভোটাররা নির্দিষ্ট কোনো দলকেই সমর্থন দেয় না। গুরুত্বপূর্ণ এই রাজ্যগুলোতেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ইলেক্টর রয়েছেন। এই রাজ্যগুলোকে সাধারণত সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান রাজ্য হিসেবে ধরা হয়। আর এই রাজ্যগুলোকেই নির্বাচনের ব্যাটলগ্রাউন্ড বা ‘যুদ্ধক্ষেত্র’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
এই দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো এবং এর ইলেক্টরদের সংখ্যা হচ্ছে- ফ্লোরিডা (২৯), পেনসিলভেনিয়া (২০) এবং ওহাইয়ো (১৮)টি।

এই অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে ওহাইও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৬৪ সাল থেকে এই রাজ্যের ভোটেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নির্ধারিত হয়ে আসছে। ফলে ওহাইও রাজ্যের প্রতি জোর সব দলের প্রার্থীদের।

এক নজরে:

# যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়কে বলা হয়-ওভাল অফিস

# যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি দুটি বড় দল ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান পার্টির মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

# যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যের সংখ্যা ৫০টি

# ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিলারী ক্লিনটন

# রিপাবলিকান দলের প্রার্থী- ডোনাল্ড ট্রাম্প|

# ডেমোক্রাট দলের প্রতীক : গাধা

# ডেমোক্রেটিক দলের অর্থনৈতিক শ্লোগান :পরিবারই প্রথম

# রিপাবলিকান দলের প্রতীক: হাতি

# রিপাবলিকান দলের অর্থনৈতিক শ্লোগান: যুক্তরাষ্ট্রই প্রথম

# প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন চার বছরের জন্য

# ১৯৬০ সাল থেকে ‘প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্ক’ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

# জনগণ ভোট দেয় বটে; কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে।

# প্রতিটি রাজ্যের সিনেট সদস্য ও প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যদের নিয়ে এই নির্বাচকমণ্ডলী গঠিত।

# নির্বাচকমণ্ডলীর (নির্বাচনী কলেজ) সংখ্যা এখন ৫৩৮। তাঁরাই ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্টকে নির্বাচিত করবেন।

# প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে প্রার্থীকে ২৭০টি নির্বাচকমণ্ডলীর (ইলেক্টরাল ভোট) ভোট পেতে হয়।

# ১৭৮৯ সালে প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন জর্জ ওয়াশিংটন। তাঁর কোনো দল ছিল না। ১৭৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় ছিলেন।

# দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন অ্যাডামস (১৭৯৭-১৮০১)। ফেডারেলিস্ট দলের প্রার্থী ছিলেন তিনি।

# তৃতীয় প্রেসিডেন্ট থমাস জেফারসনের সময় (১৮০১-১৮০৯) ডেমোক্রেটিক-রিপাবলিকান পার্টির আত্মপ্রকাশ ঘটে। ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকান পার্টির ধারা অব্যাহত থাকে ১৮২৯ সাল পর্যন্ত।

# যুক্তরাষ্ট্র গত ২৪০ বছরের ইতিহাসে (১৭৮৯ থেকে) ৪৪ জন প্রেসিডেন্ট পেয়েছে। অর্থাৎ বারাক ওবামা হচ্ছেন ৪৪তম প্রেসিডেন্ট।

# তবে একই ব্যক্তি গ্রোভার ক্লেভেল্যান্ড দু-দুবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। ডেমোক্র্যাট গ্রোভার ক্লেভেল্যান্ড (২২তম) ১৮৮৫-১৮৮৯ সালে প্রথমবার এবং ১৮৯৩-১৮৯৭ (২৪তম) দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন।

# এই দীর্ঘ সময়ে রিপাবলিকান পার্টির পক্ষ হয়ে ১৮ জন, ডেমোক্র্যাট পার্টির পক্ষ হয়ে ১৫ জন, উইগ পার্টির পক্ষ হয়ে চারজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।

# যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব নেবেন।

# যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাংলাদেশ সফর করেন- জিমি কার্টার

 

৫৬০০০ শিক্ষার্থী চাকুরীর প্রস্তুতি নিতে স্টাডিপ্রেস (www.studypress.org) ব্যবহার করছেন।  

স্টাডিপ্রেসে আপনি পাচ্ছেন এমন কিছু সুবিধা যা অন্য কোথাও পাবেন না।স্টাডিপ্রেসে প্রস্তুতি নিন এবং নিজেকে যাচাই করে নিন।  

এখানে আপনি পাবেন –

- বিসিএস, এমবিএ, ব্যাংক, সরকারি চাকুরী, শিক্ষক নিবন্ধন এর সিলেবাস অনুযায়ী অধ্যায়ভিত্তিক আলোচনা ও প্রশ্ন।

- আগের সব পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর।

-মিস্টেক লিস্ট যা আপনার ভুল শুধরে নিতে সাহায্য করবে।

- আপনার প্রোগ্রেস, যা দেখে আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কি কি পড়া বাকি আছে।

- আপনার স্ট্যাটিস্টিক, যা দেখে বুঝবেন আপনার প্রস্তুতি কেমন হচ্ছে।

- নিয়মিত মডেল টেস্ট।

- নিয়মিত কারেন্ট আফেয়ার্স আপডেট।

- সার্বক্ষণিক অনলাইন ও ফোন সাপোর্ট।