Studypress News

জামদানি বাংলাদেশেরই থাকল: জিআই স্বত্ব বিসিকের

21 Oct 2016

জামদানি নামক বস্ত্রের আদিভূমি বাংলাদেশ, তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাকাপাকি পাওয়া গেল। আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ববিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল প্রোপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশনের (ওয়াইপিও) নিয়ম মেনে জামদানিকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন—জিআই) পণ্য হিসেবে ঘোষণার ধাপগুলো শেষ করা হয়েছে। এই জিআই স্বত্ব দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনকে (বিসিক)।

জিআই পণ্য কি?

কোনো একটি দেশের নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মাটি, পানি, আবহাওয়া ও সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা এবং সেখানকার জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে সেই দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অর্থাৎ, সেই পণ্য শুধু ওই এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও উৎপাদন করা সম্ভব নয়। যেমন হিমালয় পর্বতমালার চূড়ায় যে তুলা উৎপাদিত হয় এবং তা থেকে যে শাল হয়, তা বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি দিয়েও উৎপাদন সম্ভব নয়। তাই সেটা ওই এলাকার জিআই পণ্য। আমাদের জামদানিকে বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে দাবি করা হয়েছে।

২০১৩ সালে জামদানিকে স্বীকৃতি দিয়েছিল ইউনেসকো:

জামদানি যে বাংলাদেশের পণ্য, তা এর আগেও জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও ঐতিহ্যবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো থেকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশের ইনট্রানজিবল বা নিজস্ব ও অবিকৃত পণ্য হিসেবে ২০১৩ সালে জামদানিকে স্বীকৃতি দিয়েছিল ইউনেসকো। তবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থা ডব্লিউটিওর নিয়ম অনুযায়ী জিআই মেধাস্বত্বের আলাদা স্বীকৃতি নিতে হয়।

 

ইতিহাসের পাতায় জামদানি:

খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে প্রাচীন ভারতীয় অর্থশাস্ত্রবিদ কৌটিল্য তাঁর অর্থশাস্ত্র বইয়ে ঢাকাই মসলিন ও জামদানির কথা উল্লেখ করেছেন।

১৪ শতকের মুসলিম পরিব্রাজক ইবনে বতুতার লেখায়ও ঢাকার অদূরে সোনারগাঁয়ে জামদানি তৈরির কথা লিপিবদ্ধ আছে।

বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ, ঢাকার ধামরাই, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর এলাকায় এই বিশেষ ধরনের নকশাসমৃদ্ধ পণ্য ও পোশাকের জন্ম হয়।

এই এলাকার মাটি, পানি ও মানুষের সৃজনশীল উদ্যোগের যোগফল হিসেবে সৃষ্টি এই পণ্য একসময় ইউরোপ, ইরান, আর্মেনিয়া, মোগল ও পাঠান ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যেতেন।

(সূত্র: প্রথম আলো)